স্টাফ রিপোর্টার \ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে একটি উগ্রবাদমুক্ত নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট তার প্রতিষ্ঠার সূচনা থেকে বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের নামে বিদ্যমান উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নেপথ্য কারণ অনুসন্ধান করে মূল থেকে সমস্যা নিরসনে কাজ করে চলেছে।
নিয়মিত কার্যক্রমের পাশোপাশি গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) মিডিয়া এন্ড এ্যাওয়ারনেস উইং।
এন্টি টেররিজম ইউনিট এর পক্ষ থেকে বলা হয়, এ গ্রন্থ পাঠে চিন্তাশীল পাঠক, গবেষক এবং সকল ধর্মের শান্তিপ্রিয় মানুষের উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ তথা জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে এবং এতদসংক্রান্ত অনেক বিভ্রান্তির নিরসন ঘটবে ।
গবেষনালব্ধ এ বইটির সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ছিলেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গ্যান্ড ইমাম শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসঊদ। এছাড়াও দেশবরেণ্য আলেম ওলামাগণ বইটির সম্পাদনায় সহায়তা করেছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটিইউ প্রধান কামরুল আহসান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্যে এটিইউ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান বলেন, ২০১৭ সালে দেশব্যাপী জঙ্গি মোকাবিলায় পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট গঠিত হয়। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আমরা ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহ করি, অভিযান পরিচালনা করি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা তদন্ত করি।
‘সেই সঙ্গে জঙ্গি অর্থায়ন ও সাইবার ক্রাইমসহ জঙ্গিবাদ বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করি। জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে গিয়ে যা কিছু প্রয়োজন, সেগুলো করে থাকি। এটিউকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এটিইউকে বিশ্বমানের সন্ত্রাস ও জঙ্গি মোকাবিলায় সক্ষম হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে চলছি আমরা। এ লক্ষ্যে দেশ-বিদেশ ও সেনাবাহিনী থেকে আমাদের সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ গ্রন্থটির সম্পাদনা পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের প্রধান ইমাম শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদ বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, বইটি ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে যাতে কেউ আর জঙ্গিবাদ ছড়াতে না পারে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, এখন সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে প্রচারিত বক্তব্য কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক তা গুলিয়ে ফেলা খুবই সহজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো মর্ডারেশন নেই। কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক সেটা কে নির্ধারণ করবে? স্কলার, মাওলানাদের উচিত এসব বিষয়ে সঠিক বিষয়টি তুলে ধরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, ইসলামকে বর্তমানে একটি উগ্রবাদী ও সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে পরিচিত করতে ঈসরাইলসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী চক্রান্ত করছে। সেখানে মুসলমানদেরই কাজে লাগানো হচ্ছে। এসব চক্রান্ত প্রতিরোধে আলেম-ওলামাদের ধর্মের প্রকৃত ব্যাখ্যা জনগণকে জানাতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেন, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা চলছিল। আইএস নাম দিয়ে বাংলাদেশকে অচল করার চেষ্টা হলো। শোলাকিয়ায় ঈদগাহে হামলা হলো। ক্রমাগতভাবে হামলা হতে থাকলো। এর মধ্যেই হলি আর্টিসানে হামলা হলো। সারা পৃথিবীর মানুষ বিশেষ করে আমেরিকা বলেছিল, বাংলাদেশ শেষ হয়ে গেছে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বইটির কপি বাংলাবাজারস্থ মওলা ব্রাদার্স থেকে সংগ্রহ করা যাবে।