স্টাফ রিপোর্টার : ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলির বাসায় মাদক রাখার অভিযোগ উঠে। ইন্দোনেশিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তার বাসায় অভিযান চালায়। নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে ইন্দোনেশিয়া সরকারের অনুরোধে তাকে ঢাকায় ফেরত আনা হয়।
ফেরত আনা এই কূটনীতিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ জাকার্তায় আনারকলির বাসায় গত মাসের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ অভিযান চালায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনীতিক আনারকলি দায়মুক্তির আওতাধীন ছিলেন। তাই তাকে গ্রেফতার না করে দূতাবাসের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষণিক তাকে দেশে ফেরার আদেশ জারি করা হয়।
পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। তবে এ জন্য তার বিরুদ্ধে জাকার্তা থেকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভিন্ন একটি ঘটনায় তাকে তড়িঘড়ি জাকার্তায় বদলি করা হয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এটি আমাদের জন্য বিব্রতকর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে উচ্চমর্যাদা সেটিতে আমরা কখনও ছাড় দেবো না। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই বাসায় অন্য দেশের এক নাগরিক ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ তার কাছেও যেতে পারে। আমি ইন্দোনেশিয়ার পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।
কোন বিষয়টি বিব্রতকর জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের একজন কর্মকর্তা এই ঘটনায় জড়িত বলা হচ্ছে—এটি আমদের জন্য বিব্রতকর। ঘটনাটি তিনি করেছেন না, তার বন্ধু করেছে সেটা পরবর্তীতে তদন্তে আসবে।
চলতি বছরের ৫ জুন কাজী আনারকলির বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে কাজী আনারকলি একজন নাইজেরিয়ার নাগরিকের সঙ্গে অ্যাপার্টমেন্ট শেয়ার করতেন। তিনি নাকি নাইজেরিয়ার নাগরিক মাদক রেখেছিলেন সে বিষয়ে এখনও জাকার্তার পক্ষ থেকে ঢাকাকে জানানো হয়নি।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কোনো কূটনীতিকের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালাতে পারে না। তবে ইন্দোনেশিয়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সে নিয়ম না মেনেই কাজী আনারকলির বাসায় অভিযান চালায়। পরে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাকে প্রত্যাহার করে আনা হয়। বিষয়টি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ। তবে ইন্দোনেশিয়া থেকে এখনও জবাব আসেনি।