Search
Close this search box.

পুঁজিবাজারে লেনদেনের হাওয়া লেগেছে, প্রথম ঘণ্টায় ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন

পুঁজিবাজারে লেনদেনের হাওয়া লেগেছে, প্রথম ঘণ্টায় ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন

স্পোর্টস রিপোর্টার : একটি সিদ্ধান্তেই পুঁজিবাজারে লেনদেনের হাওয়া লেগে গেছে। বৃহস্পতিবার প্রথম ঘন্টায় ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বিবেচনায় নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পরই লেনদেনের পালে এ হাওয়া লেগেছে।

আগের দিন বুধবার প্রায় তিন মাসের মধ্যে (১০ মে’র পর) সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়ার পর বৃহস্পতিবারও দিনের শুরুতে লেনদেনে বেশ ভালো গতি দেখা গেছে। একইসঙ্গে সূচকও রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী ধারায়। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার বেশি।

শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সাড়া দেয়নি। কিন্তু আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। বিনিয়োগসীমা গণনায় বাজার দরের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বাজারমূল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
এর আগে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (দামের সর্বনিম্ন সীমা) বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

রবিবার থেকে কার্যকর হয় এ ফ্লোর প্রাইস। এতে দাম সমন্বয় করায় রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। আর লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। এতে টানা পতন থেকে বেরিয়ে একদিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১৫৩ পয়েন্ট।

মঙ্গলবার লেনদেনের শেষ দিকে শেয়ারবাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে। এতে একদিকে লেনদেনের গতি বাড়ে, অন্যদিকে সূচকের বড় উত্থান হয়। অবশ্য মঙ্গলবার রাতেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়টি প্রকাশ হতে থাকে। এতে বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১০৩ পয়েন্ট। তবে শেষদিকে বিক্রির চাপ বাড়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৫০ পয়েন্ট।

এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে লেনদেনের শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৫ পয়েন্ট। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লেনদেনের গতি বাড়লেও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়েনি।

বৃহস্পতিবার নির্দেশ জারি করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, নির্দেশটি অবিলম্বে কার্যকর হলো। এর মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রক্ষণশীল নীতি পরিবর্তনের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, সেটি আরও স্পষ্ট হলো। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর নানা সময় ব্যাংকে বিনিয়োগের সীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনা পদ্ধতি পাল্টানোর দাবি ছিল। কোনো শেয়ারের ক্রয়মূল্য বা বাজার মূল্যের মধ্যে যেটি বেশি, সেটি হিসাব করেই এই লিমিট গণনা করা হতো। এর ফলে শেয়ারের দর বেড়ে গেলে ব্যাংকগুলো তা বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতো। ফলে বাজারে শেয়ারের বিক্রয়চাপ তৈরি হতো। এ কারণে শেয়ারের ক্রয়মূল্য ধরে এক্সপোজার লিমিট নির্ধারণের দাবি ছিল। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও এই সুপারিশ করে আসছিল। গত ১৮ জুলাই এক্সপোজার লিমিটের হিসাব পরিবর্তনে মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি পাঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় থেকে ফিরতি চিঠিতে একটি কৌশলী মতামত দেয়া হয়। এতে শেয়ারের ক্রয়মূল্যকেই বাজারমূল্য হিসেবে বিবেচনার মত দেয়া হয়। এর ফলে এক্সপোজার লিমিটের সংজ্ঞায় বাজারমূল্য থাকলেও কার্যত ক্রয়মূল্যতেই সেটি নির্ধারণের সুযোগ তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সেই মত মেনেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ব্যাংকের ক্রয়মূল্যকে ‘বাজারমূল্য’ বিবেচনা করে সাক্যুলারও জারি করা হয়। তাতে পুঁজিবাজারে লেনদেনের হাওয়া লাগে। প্রথম ঘন্টায় ৩০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ