স্টাফ রিপোর্টার : দেশে সংকট রয়েছে, সেই সংকট মোকাবিলায় সবাইকে একসাথে করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও সবার অংশগ্রহণে স্বাধীনতা লাভ করেছি। ঠিক এমনিভাবে সবাই একসাথে কাজ করলে এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। বুধবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ‘নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: জনজীবনে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক নগর সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুনের সঞ্চালনায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পাল। তাজুল ইসলাম বলেন, বহু টাকা গেছে বিদেশে এবং তা ফিরিয়েও আনা হয়েছে। আইএমএফ থেকে আমরা মাঝে মাঝে ঋণ নেই এবং তা শোধ করে দেই। কোভিডের সময়ও নিয়েছি। এটা স্বাভাবিক বিষয়। আমার মনে হয় না দেশে কোনো সংকট আছে। কিছু কিছু যেগুলো আছে, সেগুলো আমরা সবাই মিলে মোকাবিলা করতে পারবো।
তিনি বলেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশসহ সারাবিশ্বের প্রায় ২৫ ভাগ জ্বালানি আসে রাশিয়া থেকে। এখন সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বের সবথেকে বেশি জ্বালানি সরবরাহ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। কিন্তু ভেনেজুয়েলার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেল আনা সম্ভব নয়। আর তেল রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সৌদি আরব থেকে আমরা তেল সংগ্রহ করছি। কিন্তু রাশহ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপও তাদের উপর নির্ভর হচ্ছে। সে কারণে থাকার কারণে একটা চাপ আমাদের উপরেও পড়ছে।
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, যে হারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে তাতে জনজীবনে সংকট ঘনীভূত হবে। ২০০৬/০৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের তুলনায় বিদ্যুতের খুঁটি বেশি করার আকাঙ্ক্ষা ছিল বলে লোডশেডিং হতো বেশি। তখন আমরা যেখানে ছিলাম, এখনো যেন আমরা সেখানেই আছি। মনে হচ্ছে সার্কেলটা যেন পূর্ণ হচ্ছে। রেন্টাল আর কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলোতে ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে, অথচ সেখান থেকে কোনো বিদ্যুৎ সেভাবে পাওয়া যায় না। সরকারের উচিত বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। কোথায় গিয়ে থামতে হবে, সরকার সে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি। সরকারকে বিভিন্ন কার্যক্রমে সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়নি। ফলে আমাদের ওপর ভর্তুকির বৃহৎ দৈত্য ভর করেছে।
তিনি বলেন, সরকারের জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি না করে হয়তো উপায় ছিল না, তবে এতটা মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। আমাদের দেশে অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো অক্টোবর মাস। এই সময়ে যদি আমাদের মূল্যস্পৃতি যদি ডাবল ডিজিটে চলে যায়, তবে সেটা আমাদের জন্য খুব ভালো হবে না। মূল্য কমানো হবে বলে আমাদের শুধু আশার মধ্যে না রেখে এটি কার্যকর করতে হবে। সংলাপে আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রিয়াজুল হক প্রমুখ।