স্টাফ রিপোর্টার : বৈঠকের পর বৈঠক হয়েছে। তাতেও কোন সমাধান আসেনি। আর তাই চা শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। লোকসানের কথা বলে সামান্য মজুরি বাড়ানোর পক্ষে চা বাগান মালিকরা। রাজধানীর শ্রম ভবনে শ্রম অধিদপ্তরের মধ্যস্থতায়, প্রায় ৬ ঘণ্টার বৈঠকের পর এমনটাই জানান তারা।
মালিকপক্ষ বলছে, চা শিল্প অনেক ব্যয়বহুল। তাই শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী মজুরি ৩০০ টাকা করা সম্ভব নয়। এর আগে শ্রীমঙ্গলে প্রথম দফা বৈঠকেও আসেনি কোনো সিদ্ধান্ত। শ্রমিকরা জানান, সারা দিন হাঁড়ভাঙা খাটুনির পর মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। বর্তমান বাজারে যা দিয়ে পরিবারের একবেলার খাবার জোগাড় করাই কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে দৈনিক মজুরি ৩শ’ টাকা করার দাবি তাদের। এদিকে ধর্মঘটের ফলে বাগান মালিকদের প্রতিদিন প্রায় ৩০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আলোচনা শেষে বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী বলেছিলেন, চা শ্রমিক ইউনিয়ন, বাগান মালিক ও চা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া ও মালিকপক্ষের বক্তব্যের পরিপেক্ষিতে দুয়েক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শ্রমিকদের দাবির পরিপেক্ষিতে সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী উপদেষ্টা রাম ভোজন কৈরি বলেন, সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত চা শ্রমিকদের আন্দোলন চলবে। চা শ্রমিকরা ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে অনড় রয়েছেন। ১৩৪ টাকা মজুরি দেওয়ার প্রস্তাব করে মালিকপক্ষ। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন শ্রমিকরা। লাগাতার কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানান। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এদিনও সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে চা শ্রমিকরা।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের লংলা ভেলির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু গোস্বামী গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে আমাদের মজুরি ১২০ টাকা। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে এ টাকায় কোনোভাবেই সংসার চালানো সম্ভব নয়। আমরা ৩০০ টাকা মজুরির প্রস্তাব করেছি। আমাদের প্রস্তাব না মানা হলে কর্মবিরতি চলবে। বৈঠকে মালিকপক্ষ কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিকপক্ষ বলছে, আমরা আন্দোলন বন্ধ করলে তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরও বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের বর্তমান মজুরির সঙ্গে আরও ১৪ টাকা যোগ করে মোট ১৩৪ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি। আর তাই আন্দোলন অব্যাহত আছে।