স্টাফ রিপোর্টার : লঞ্চে সন্তানের জন্ম হয়েছে। তাতে করে আজীবন যাতায়াত ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক নারী। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় লঞ্চের ডেকে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মা ও নবজাতক সুস্থ আছে। নবজাতকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা উপহার দিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে ওই নবজাতক ও তার মা-বাবার যাতায়াত আজীবনের জন্য ফ্রি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে লঞ্চের সুপারভাইজার জিল্লুর রহমান এ ঘোষনা দেন।
জিল্লুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভাই ও ভাবীকে নিয়ে ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে ওঠেন সন্তানসম্ভবা ঝুমুর বেগম। লঞ্চের নিচতলায় জায়গা করে নেন তারা। ঝুমুমের স্বামী হারিসুর রহমান নারায়ণগঞ্জে মুরগির দোকানের কর্মচারী। তাদের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার সোলনা গ্রামে। সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময় ছিল আরও ১৮ দিন পর। কিন্তু লঞ্চ ছাড়ার পর ঝুমুরের প্রসব বেদনা শুরু হয়। এ সময় ওই লঞ্চে থাকা একজন ধাত্রী ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন নার্স এগিয়ে আসেন। আর ওষুধসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা লঞ্চ থেকে দেওয়া হয়। এরপর রাত ১টার দিকে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ। এটা তার দ্বিতীয় সন্তান। বরিশাল ঘাটের সুপারভাইজার মিজানুর রহমান বলেন, লঞ্চ মালিক খুশি হয়ে মা ও নবজাতককে অর্থ উপহার দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ওই নবজাতক ও তার মা-বাবার আজীবন যাতায়াত ফ্রি করে দিয়েছেন।
নবজাতকের মামি রুমকি বেগম বলেন, এখন বাচ্চা ও তার মা শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ আছে। আমরা খুবই আনন্দিত। কোনো বিপদ ছাড়াই আল্লাহ আমাদের হেফাজত করেছেন। লঞ্চে একজন নার্স ছিলেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন ভোরে সিজার করানোর জন্য। তবে একজন ধাত্রী পেয়ে যাওয়ায় সন্তান প্রসবে কোনো সমস্যা হয়নি। ধাত্রী বলেন, ওদের পাশের সিটেই আমরা ছিলাম। অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি নিজে তত্ত্বাবধায়ন করে সন্তান প্রসব করাই। প্রসূতির মা বলেন, আগামী মাসের ৬ তারিখ সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারিত ছিল। আজ লঞ্চে ওঠার পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে খবর পেয়ে আমিও চলে আসি। লঞ্চেই মাঝরাতে নাতি হয়েছে। এটি আমার মেয়ের দ্বিতীয় সন্তান। ওর আরেকটি ১০ বছরের ছেলে রয়েছে। এ নিয়ে লঞ্চে চিকিৎসক রাখার দাবিও ওঠে। যাতে অসুস্থ রোগীকে অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারে।