স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের পর শনিবার চা শ্রমিকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু একাংশ ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বেড়ে ১৪৫ টাকা হওয়া মজুরি মানতে রাজি হননি। তারা রবিবারও আন্দোলন করেন। ধর্মঘট করেন। এরপর রাতে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত হন। শেষে আজ থেকে কাজে ফিরেন। আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফেরেন। আর কোন আন্দোলন নেই। সব চা শ্রমিকরাই এখন কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে হবিগঞ্জের চা শ্রমিকদের একটি গ্রুপ কাজে যোগ দিতে রাজি হননি।
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার রাতে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চা-বাগানের শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে শ্রমিকরা আগের মজুরিতে বাগানে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
এরআগে গত ২০ আগস্ট শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে চা-শ্রমিক ও সরকারের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয় ১৪৫ টাকা। এরপর চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার কথা জানান চা-শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সাধারণ চা-শ্রমিকদের তোপের মুখে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ৩ ঘন্টার মাথায় কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন চা-শ্রমিক ইউনিয়ন। ফলে রবিবার বিভিন্ন চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করা হয়।
এরপর রবিবার রাতে অনেকটা গোপনে চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। বৈঠকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ভ্যালীর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠক চলাকালে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, চা-শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরম শ্রদ্ধা করেন। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই সিদ্ধান্ত। চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রেখে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন এবং কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনে নেব। বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ২২ আগস্ট থেকে কাজে যোগদান করবেন। আপাতত চলমান মজুরিতেই শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরির বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে বলে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।