স্টাফ রিপোর্টার – ভারত সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি (মমতা) আমার বোনের মতো, আমি যখনই চাই তার সঙ্গে দেখা করতে পারি। আমাদের সবসময় ভালো সম্পর্ক ছিল।’ সঙ্গে তিস্তার পানি না দিলে ইলিশও দেবো না বলে হাসিমুখে জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতের সফরের মতো এবারও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরে জানতে পারেন যে, মমতা দিল্লিতে আসছেন না। তার ভাষায়, মমতা আমার বোনের মতো এবং আমরা যেকোনও সময় দেখা করতে পারি। কিছু সম্পর্ক ব্যক্তিগত, রাজনীতির বাইরে। ঠিক গান্ধীদের সাথে আমার সম্পর্কের মতো।
মূলত ভারতের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক এবং দেশটির প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা এই কথা বলেন। ইতালিতে নিজের মায়ের মৃত্যুর কারণে সোনিয়া গান্ধী এখন ভারতের বাইরে অবস্থান করছেন।
এছাড়া সফরের প্রথম দিন সোমবার রাজধানী নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন দরগাহ ও মাজারে গিয়ে কার্যত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নিজের পিতার হত্যার পরে দিল্লিতে নির্বাসনে থাকার সময় তিনি প্রথম এই দরগাহ পরিদর্শন করেছিলেন। দ্য হিন্দু এ নিয়ে প্রতিবেদন করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার এই সফর সম্পর্কে একটি অস্বাভাবিক অনুভূতি ছিল, এটি খুব আধ্যাত্মিক জায়গা। আমি তখন গিয়ে আমার বাবার (বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের) ডায়েরি পড়ি এবং জানতে পারি, তিনি ১৯৪৬ সালের ৯ এপ্রিল নিজামুদ্দিনের দরগায় এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আজমীর শরীফ দরগাহ পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিস্তার পানি না দিলে ইলিশও দেবো না। সোমবার ভারতে গিয়ে এক কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন কথাই বলেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে এমন কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিস্তা ও অন্যান্য নদীতে পানির নিম্ন প্রবাহের বিষয়টি সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসতে হাসতে বলেন, আপনি (ভারত) আমাদের পর্যাপ্ত পানি দিচ্ছেন না, তাই আমি এখনই আপনাকে ইলিশ মাছ দিতে পারছি না। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আসন্ন পূজা মৌসুমের মধ্যে (অক্টোবরে) ইলিশ সরবরাহ করতে পারবো।
দ্য হিন্দু বলছে, বিশেষ সংবর্ধনার জন্য আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নৈশভোজে প্রতিটি টেবিলের নামকরণ বাংলাদেশের নদীর নামে করা হয়েছিল। একটি টেবিলের নাম তিস্তা ছাড়াও মেঘনা, পদ্মা, খোয়াই ও কুশিয়ারা নামকরণও করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডায় পানি ভাগাভাগির বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি বিবেচনায় সোমবারের এই কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ হাইকমিশন। দিল্লিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, কূটনীতিক এবং সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।