Search
Close this search box.

ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারত সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী – ফখরুল

বর্তমান সরকার বিরোধী দলহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করে ক্ষমতা ভোগ করতে চায় - মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার – বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাম্প্রতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বলেছেন, আগামীতেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারত সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারত থেকে কিছুই আনতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। ইতি প্রকাশনের উদ্যোগে ‘রাজনীতি পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে ‘স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক’ বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের একজন মন্ত্রী। এই সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে। কিন্তু এভাবে মামলা করে, গুলি করে মানুষকে থামানো যাবে না। সংগ্রামের মাধ্যমে এই অবস্থার পরিবর্তন করবে মানুষ।

বিএনপিও ভারতের সঙ্গে সু-সম্পর্ক চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের এই সংকটের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। তারা দেশে লুটপাটের অর্থনীতির রাজত্ব কায়েম করেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে তারা। এখন সত্য কথা বলাও অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে! একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের জন্য যুদ্ধ করেছি। কিন্তু আমরা দল-মত নির্বিশেষে স্থিতিশীল রাজনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা দেশে লুটপাটের অর্থনীতির রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ মানুষের সাথে বেঈমানি করেছে। ভারতের সাথে সুসম্পর্ক হোক আমরাও চাই।

তিনি বলেন, আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। মামলা, হামলা, গুলি করে বাংলাদেশের মানুষকে থামানো যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রামী। এই সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষ বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করবে। বাংলাদেশের ইতিহাস একদিকে যেমন বঞ্চনার, তেমন সংগ্রামের। বাংলাদেশের ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবের। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে অবৈধভাবে, এখন সত্য কথা বলাটাই অপরাধ। ১৯৭১ সালে আমরা একটা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করলেও স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারিনি। স্বাধীনভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারিনি। আমরা জাতি হিসেবে এখানে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছি।

তিনি বলেন, ১৯৭২ সাল থেকেই দেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। দেশ যাতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী কাঠামোতে দাঁড়াতে না পারে। সেজন্য সবশেষ চতুর্থ সংশোধনী দিয়ে বাকশাল কায়েম করে আওয়ামী লীগ। বাকশাল কেন তৈরি করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তরটা আওয়ামী লীগের কেউ দেয় না, সেই প্রশ্ন তুলেও না।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৩-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জালিয়াতি কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। তখনো তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে ব্যবহার করেছিল। ঢাকায় এনে ব্যালট বাক্স গণনা করেছিল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন সমাজতন্ত্রকে বিশ্বাস করেনি, আজকে সেই দল বলে সমতার কথা। আজকে দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে, যে দেশে ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।

বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, যখন দেশের মানুষকে সীমান্তে হত্যা করছে, তিস্তার পানি দিচ্ছে না, তখন প্রধানমন্ত্রী ভারতে নেচে গেয়ে উৎসব করছেন! আসলে তারা দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করছে।

তিনি বলেন, কেনো সেদিন রক্ষীবাহিনী তৈরি হয়েছিল? কেনো বাকশাল করতে হয়েছিল? কেনো একজন ব্যক্তিকে আজীবন ক্ষমতায় রাখতে হবে। কেনো আপনাদের থেকে জাসদের জন্ম হলো? এসব উত্তর আওয়ামী লীগ ও তাদের বুদ্ধিজীবীরা দেন না। তারা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। মূলত তখন থেকেই তারা দেশের ন্যায়-নীতিকে ধ্বংস করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। আজকে হাওরের ওপর দিয়ে উড়াল সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে। তারা সেখানে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে ২৬ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকবে! যেখানে দেশের ২৬ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, সেখানে এ ধরনের বিলাসি প্রকল্প নিঃসন্দেহে প্রশ্নবোধক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বইটির লেখক ও কলামিস্ট মো. হারুন অর রশিদ, প্রকাশক জহির দীপ্তি, স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সরদার মো. নূরুজ্জামান প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ