স্টাফ রিপোর্টার – শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ ভালো থাকবে, আমরা সবাই ভালো থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুর-৪ (২৬৩) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান। গতকাল সোমবার শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবের মহাঅষ্টমীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সংসদ সদস্য তার বক্তব্যে বলেন বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’। বর্তমানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। যেই কথাগুলো বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় সমাদৃত। অর্থাৎ আপনি আপনার ধর্ম নিজ নিজ নিয়মানুযায়ী পালন করবেন। আর আপনাদের উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি আমরা সকলে মিলে করবো। যেমন আজ আমি ও আমরা আপনাদের এখানে পুজার উৎসব ভাগাভাগি করতে এসেছি। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে এখানে এসেছি। ধর্ম চর্চায় বাংলাদেশের মাটিতে কেই কাউকে বাঁধা দিতে পারবে না। সবাই সবার নিজ নিজ ধর্ম সাচ্ছন্দ্যে পালন করবে। ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে কখনো বাধা দিতে পারবে না। যা আমাদের রাষ্ট্রীয় সংবিধানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিপিবদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান সেটিকে মুছে ফেলে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করে পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে। যেটির মাধ্যমে তিনি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাস্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে। এবং এর মাধ্যমে আমাদের মাঝে ধর্মীয় উগ্রতা ছড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন আমরা সকল ধর্মের অনুসারী সকলেই ভূমি পুত্র / ভূমি কন্যা। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা সকলেই মানুষ। আমাদের পরিচয় আমরা সকলেই বাঙালী। এই দেশের মাটিতে আমার যতটুকু অধিকার আছে আপনাদেরও ঠিক ততটুকুই অধিকার রয়েছে। এই বাংলাদেশকে স্বাধীন করার ক্ষেত্রে সব ধর্মালম্বী মানুষের সমান ভূমিকা রয়েছে। এই বাংলাদেশ আমাদের সবার। তাই আপনারা আপনাদের ধর্মীয় উৎসব পালনের ক্ষেত্রে কখনো ভয় পাবেন না। যদি কেউ আপনাদের পূজা মণ্ডপে কোন ধরনের ধর্মীয় উগ্রতা ছড়াতে আসে বা আসার চেষ্টা করে তাদেরকে উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবেন। আপনার নিজ নিজ অবস্থান থেকে অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করবেন। প্রয়োজনে আমাকে তৎক্ষনাৎ জানাবেন। আমরা তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দিবোনা। আমি সবসময় আপনাদের সাথে আছি, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সাথে আছে। আপনাদের কোন ভয় নেই, পুলিশ, আনসারসহ সকল আইনশৃখলা বাহিনী এবছর কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। এছাড়া আমাদের আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাতো রয়েছেই।
এছাড়া সংসদ সদস্য আরও বলেন বর্তমানের কথা বিবেচনা করে ভবিষ্যতের বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। করোনা মহামারী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। তবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতা এবং সততায় আমরা সেটা মোকাবিলা করতে পেরেছি। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বিশ্বের তিনজন সৎ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তাই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ ভালো থাকবে, আমরা সবাই ভালো থাকবো। তারপরও ভবিষ্যৎ সংকটের কথা বিবেচনা করে এখন থেকেই আমাদের সতর্ক হতে হবে। এ সময় সংসদ সদস্য আমাদের বাসস্থানের চারপাশে বিভিন্ন ফলমূল এবং শাকসবজি চাষের ব্যাপারে উৎসাহিত করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলার প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ্ত রায়, ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব পঙ্কজ কুমার, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা খাজে আহমদ মজুমদার, জি এম হাসান তাবাচ্চুম, রফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান শাহীন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বাহার উদ্দিন সহ উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
খাজে আহমেদ মজুমদার তার বক্তব্যে বলেন মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি মহোদয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়সহ রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্যে ইতোমধ্যেই ফরিদগঞ্জে অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছে। ফরিদগঞ্জের প্রতিটি পূজা মণ্ডপে এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফরিদগঞ্জের ইতিহাসে এর আগে কোন সংসদ সদস্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্যে এতো উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে বরাদ্দ দেয়নি। কেউই রাত দুটো পর্যন্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকেনি। আজ এখন রাত দুটো বাজে। মাননীয় এমপি মহোদয় আপনাদের সুখে দুখে এখনো আপনাদের সাথে আছে। তাই ফরিদগঞ্জের এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা আবারো মুহম্মদ শফিকুর রহমান ভাইকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই।
মহাঅষ্টমীর এই রাতে সংসদ সদস্য উনার নিজ সংসদীয় আসনের ছয়টি পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের রাতজেগে পূজা মন্ডপ পাহারা দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। উল্লেখ্য নবমীতে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বাকি পূজামণ্ডপগুলো পরিদর্শনে যাবেন। এবার ফরিদগঞ্জে সরকারি তালিকাভুক্ত মোট ২০টি পূজা মন্ডপ রয়েছে।