স্টাফ রিপোর্টার – প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বুধবার সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকালীন সময়ে সিইসি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সিইসি বলেন, ভোট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আমরা স্বচক্ষে গোপন কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোট দিতে দেখেছি। তাই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন কমিশন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আমরা ভোটটাকে সত্যিকার অর্থে ভোট হিসেবে দেখতে চাই। কিছু অনিয়ম দেখা গেছে, ওখানে সুষ্ঠুভাবে ভোট হতে দেখা যাচ্ছে না। এতে সঠিক জনমতের প্রতিফলন হবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এখন চাকরি বিধি অনুযায়ী বা অন্য বিধি অনুযায়ী কী অ্যাকশন নেবো তা পরবর্তীতে দেখবো। আমরা টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, যে আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেবো যে কমিশন যদি মনে করি নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না, তাহলে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। আমরা সেই আলোকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যখন নেবো তখন জানাবো।
তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণের বাইরে কেন চলে গেল তা আমরা বলতে পারবো না। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে কি হচ্ছে এবং সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন হচ্ছে এখন তা চটজলদি বলতে পারবো না।
সিইসি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমত কাজ করছে কিনা, তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনো ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না। ওই যে মানবিক আচরণ, আরেকজন ঢুকে যাচ্ছে, দেখিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকেই দেখছি একই কালারের গেঞ্জি পরে, শাড়ি পরেছে। এতে আচরণ বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। এবং এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থি। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরকেই আমরা ডাকাত দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ, আইনের প্রতি সকলকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সকলে যদি আইন না মানি নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।
এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, গাইবান্ধার উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৩৫টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আরও পাঁচটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে। ওদিকে উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে নৌকার প্রার্থীরা বাকি সব স্বতন্ত্র প্রার্থী একযোগে ভোট বর্জন করেছেন।
এদিকে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছাড়া বাকি সব স্বতন্ত্র প্রার্থী একযোগে ভোট বর্জন করেছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সাঘাটা উপজেলার বগেরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে একযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ৪ প্রার্থী।
এর আগে সকাল ৮টায় সাঘাটা উপজেলার ৮৮টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৫৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সংঘর্ষ ও অনিয়মের অভিযোগে ৪৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।