স্টাফ রিপোর্টার – বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে গিয়েছেন তারেক জিয়া। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলব, সেই মুচলেকা প্রত্যাহার করুন। তাকে দেশে আনার দাবি করার আগে মুচলেকা প্রত্যাহার করেন। নেতাকেও বলুন প্রত্যাহার করার জন্য। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসিলা যাত্রী ছাউনি এলাকায় ঢাকা নগর পরিবহণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মামলা প্রত্যাহার করে তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনবে বিএনপি। এটাই হলো সত্যিকার অর্থে মামা বাড়ির আবদার। তারেক জিয়া ২০০৮ সাল থেকে বিদেশে আছেন। এত কিছু হয়ে গেল দেশে। এত বছরে যে নেতা দেশের রাজপথে থাকেনি, আন্দোলন করার মতো সৎ সাহস দেখাতে পারেনি, তিনি টেমস নদীর পাড় থেকে হুঙ্কার দিবেন, আর দেশে আন্দোলন হবে? কখনই হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে। সেখানে বেগম খালেদা জিয়া নাকি বক্তব্য রাখবেন, যিনি একজন দণ্ডিত, সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মির্জা ফখরুল সাহেব তাকে মহাসমাবেশে নিয়ে আসবেন। বেগম জিয়ার জন্য আমি প্রশ্ন রাখতে চাই। দেখার মতো, চোখে পড়ার মতো একটি মিছিলও কি করতে পেরেছেন? শেখ হাসিনার উদারতার জন্যই বেগম জিয়ার দণ্ড স্থগিত রাখা হয়েছে। বারবার তার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ এ মামলা করেনি। মামলা প্রত্যাহার করতে হলে যারা মামলা করেছে, তাদেরকে বলুন কিংবা আদালতকে বলুন। আমাদের কাছে এটা বলা, মামা বাড়ির আবদার।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে মিটিং করেছে বিএনপি। ঘোষণা তো শুনলাম ১০ লাখ মানুষ জমায়েত হবে। শেষ পর্যন্ত লাখের কাছাকাছি হয়েছে। চট্টগ্রামে যদি আমরা ঘোষণা দেই ১০ লাখ লোক হবে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে, তাই হবে। সেখানে পারেননি, অন্য আর বিভাগেও পারবেন না। স্বপ্ন যেভাবে দেখছেন ঢাকাতেও হবে। আপনাদের এ রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উড়ে যাবে। ডিসি-এসপিরা নাকি সরকারের ক্যাডার বাহিনী। আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, দেখে দেখে ডিসি-এসপি তখন আপনাদের অনুগতদের বানিয়েছিলেন। দলীয় ক্যাডার কোথাও নিয়োগ করেননি শেখ হাসিনার সরকার। যোগ্যতা অনুযায়ী যে যার জায়গায় আছে, তাদের বাদ দেওয়ার অধিকার কারো নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ফখরুল ইদানীং খুব বেশি বলছেন, রাজপথেই ফয়সালা হবে। দিন তারিখ ঠিক করেন। ফয়সালা করবেন, আবার লাঠিসোটা নিয়ে আসলে বিপদ। অস্ত্র নিয়ে আসলে আবার সেই পুরনো আগুন সন্ত্রাস। লাঠি আর আগুন সন্ত্রাস চলবে না। শান্তিপূর্ণভাবে আসুন। আমরা সতর্কভাবে রাজপথে আছি। নির্বাচন হবে যথাসময়ে। সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। গাইবান্ধা উপনির্বাচনেও করেনি। কোথাও করছে না। আগামী নির্বাচনে আসুন, আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাই না। আর যদি মনে করেন রাজপথ থেকে আমাদের হটিয়ে দেবেন, তাতেও আমরা প্রস্তুত। খেলা হবে, হবে খেলা।
‘বিএনপির ঢাকায় মহাসমাবেশ করা স্বপ্নই থেকে যাবে’ বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো বিভাগেই বিএনপির ১০ লাখ লোকের সমাবেশ করার সামর্থ্য নেই, ঢাকাতেও না। তাদের জনসমাবেশে তাদের নেতাকর্মীরাই আসেনি। বিএনপির প্রতি নেতাকর্মীদেরই বিশ্বাস নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কোনো সভা-সমাবেশ বা মিছিল করতে পারেনি বিএনপি। এটা তাদের দলের ও নেতাকর্মীদের ব্যর্থতা। সরকার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেনি তাই প্রত্যাহারের কোনো যুক্তি নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গাইবান্ধার মতো আগামী নির্বাচনও অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইসি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকায় বসে সিসিটিভি দেখে নির্বাচন বন্ধ করা কতোটা যৌক্তিক ও আইনসঙ্গত- বিষয়টি ভেবে দেখতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অতীতে এরকম নজিরবিহীন কিছু ঘটেছে বলে আমার কাছে মনে হয়নি। কী কারণে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করেছে তা বোধগম্য নয়।