স্টাফ রিপোর্টার- সুগার মিলসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, সুগার মিলের অনেক পতিত জমি রয়েছে।
সেগুলোকে চাষের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জমি কোথায় কোথায় পতিত রয়েছে, তা খুঁজে বের করে চাষের আওতায় আনতে হবে।
রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভা সঞ্চালনা করেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিবছর জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের চাহিদাও বাড়ছে। কাজেই, যেকোনো মূল্যে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য যেটুকু সুযোগ আছে, তার সবটুকু আমরা কাজে লাগাতে চাই। সেজন্য, মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তাদের আরও তৎপর ও সক্রিয় হতে হবে। কীভাবে উৎপাদন আরও বাড়ানো যায়-তা খুঁজে বের করতে হবে।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী সুগার মিল এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৭২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট চার হাজার ১৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এবছর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রয়েছে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে, যার পরিমাণ ৬৬০ কোটি টাকা।
এদিকে দেশে ১৮ লাখ টন ধান, চাল ও গমের মজুদ আছে। দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, আমনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। যুদ্ধের জন্য সারা পৃথিবীতে সমস্যা হলে আমরা তো আলাদা নয়। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেছেন সজাগ ও সচেতন থাকার জন্য।
মন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে চালের মজুদ আছে প্রায় ১৬ লাখ টন। ধান ৩৭ হাজার টন ও গম ১ লাখ ৬৯ টন। এটা আমরা সাধারণত আশা করি ১০-১২ লাখ টন থাকা উচিত। কার্তিক-আশ্বিন মাসে প্রায় ১৮ লাখ টন খুবই ভালো মজুদ বলে আমি মনে করি। কাজেই এ নিশ্চয়তা দিতে পারি, দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
চাল ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খারাপ। এ বিষয়ে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর মানুষ একটা শঙ্কার মধ্যে আছে। সারা পৃথিবীর মানুষ উদ্বিগ্ন, একটা ব্যাপক মন্দা হতে পারে সারা পৃথিবীতে, খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। এ বছর ইংল্যান্ডের মতো দেশে ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা হয়েছে। পুরো গমের ক্ষেত পুড়ে গেছে। অন্যান্য ফসলের ক্ষেতও পুড়ে গেছে। আমেরিকার মতো দেশে খরা হয়েছে। এজন্য একটা আশঙ্কার কথা আসছে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের জন্য সারা পৃথিবীতে সমস্যা হলে আমরা তো আলাদা নয়। আমরা তো গম বিদেশ থেকে আনি। সেজন্য সজাগ থাকার জন্য, সচেতন থাকার জন্য- এটা প্রধানমন্ত্রীর সতর্ক বাণী সবার জন্যই। সাধারণ নাগরিকদেরও আমরা সচেতন করছি। কার্পেটের নিচে ধুলো লুকিয়ে রেখে তো লাভ হবে না, তাতে দেশ আরও বিপর্যয়ের মধ্যে যাবে। কার্পেটের নিচে ধুলো দিলে তো যখন বিপদ হবে তখন মোকাবিলা করা কঠিন হবে।