স্টাফ রিপোর্টার – আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার সফলতা অর্জন করেছি এবং সেই সফলতার ভিত্তিতে ২০৪১ সালের মধ্যে এখন আমরা টেকসই, জ্ঞাননির্ভর ও সৃজনশীল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে চাই। ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) ৪৫তম আসর শুরু হয়েছে ঢাকায়। এবারই প্রথম এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), আইসিপিসি ফাউন্ডেশন ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক যৌথভাবে এ প্রতিযোগিতার মূল আয়োজক। রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমনটি বলেন।
তিনি বলেন, এ আয়োজন আইসিটিতে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের দারুণ একটি সুযোগ। একই সঙ্গে আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ আইসিটি নেতৃত্বদের বর্তমান নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে দেওয়ারও একটি সুযোগ। আমরা আমাদের সব বন্ধুকে বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও আতিথেয়তার স্বাদ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
পলক আরও বলেন, ১৩ বছরে আইসিটি খাতে আমাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। ১৩ বছর আগে আমাদের মাত্র ৫০ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, এখন ১৩০ মিলিয়ন। প্রযুক্তি খাতে রপ্তানি ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। এখন সেটি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম বিল পোচার বলেন, আমাদের একটি উন্নত ভবিষ্যৎ তৈরি করতে হবে। এর জন্য আমাদের একসঙ্গে বসে এটি দেখবে হবে যে আমরা কী করতে পারি। একা একা বসে ভাবলে হবে না যে আমরা কী করেছি। আমরা যতক্ষণ না একসঙ্গে বসছি, ততক্ষণ জানি না যে আমরা কী করতে পারি। আমরা সবার জন্য সুযোগ তৈরি করতে চাই। এ জন্য এ ধরনের আসর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ আয়োজন বাংলাদেশে হচ্ছে, এ নিয়ে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ও আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকার পরিচালক কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা আমাদের প্রয়াত উপাচার্য জামিলুর রেজা চৌধুরীর উদ্যোগ ছিল। এই সম্মানজনক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতাকে ‘অলিম্পিকস অব প্রোগ্রামিং’ বলা হয়। এ প্রতিযোগিতা কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল শিক্ষায় ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে অবদান রেখেছে। শিক্ষাগত সুযোগ তুলে ধরতে এর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। এবারের আসরকে কেন্দ্র করে বিশ্বের ছয়টি মহাদেশের ১১১টি দেশে ৪০০-এর বেশি ‘অন সাইট’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এতে ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০টি দেশ থেকে সেরা ১৩৭টি দল চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এখানে আমাদের দেশের আটটি দল রয়েছে।
চীন, জাপান ও থাইল্যান্ডের পর এশিয়ার চতুর্থ দেশ হিসেবে আইসিপিসির আয়োজক দেশ হলো বাংলাদেশ। ১১ নভেম্বর এবারের আসরের পর্দা নামবে। মূল প্রতিযোগিতা পর্ব চলবে ৮ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। ১০ নভেম্বর ৬ ঘণ্টার মূল ‘প্রবলেম সলভিং’ প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের নাম ঘোষণা করা হবে। ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিপিসিতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। আইসিপিসির ৪৪তম আসরে এশিয়ার পশ্চিম অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্মান অর্জন করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।