স্টাফ রিপোর্টার – বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, কোভিড ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ পিছিয়েছে। বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইনের কাজ চলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না হলেও খুব একটা বিলম্ব হবে না প্রকল্পকাজ শেষ করতে। তিনি বলেন, কভিডের কারণে রূপপুর সঞ্চালন লাইনের কাজ কিছুটা পিছিয়েছে। সাবস্টেশনের কাজ দুইপক্ষের কারণে একটু দেরি হয়েছে। তার পরও আশা করছি, নির্ধারিত সময়েই সব শেষ করা যাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ভারতের তিনটি কোম্পানি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ করছে। মূলত কোম্পানি তিনটির কাজে গতি না থাকায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর রূপপুর কেন্দ্রর কোজ শেষ হবে। এর মধ্যে সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হলে রূপুপর কেন্দ্র বসে থাকবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, রূপপুরের সঞ্চালন ব্যবস্থাপনার কাজ যথাসময়ে শেষ সমন্বিতভাবে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে নিরাপত্তা। সব মিলিয়ে কাজ সন্তোষজনক। তবে সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। তারপরও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ যথাসময়ে বা দ্রুত সময়েই শেষ হওয়ারর প্রত্যাশা।
কয়েকদিন আগে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, চেষ্টা করছি যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়। তিনি বলেছিলেন, আমরা শতভাগ বিদ্যুতের লাইন টানিয়েছি, শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়ার পরেও কোনো লোডশেডিং ছিল না; এটা শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। আমরা শুধু জ্বালানিতে একটা অ্যাডজাস্টমেন্টে গিয়েছি। চেষ্টা করছি এর থেকে খারাপ পরিস্থিতি যেন না হয়। লোড শেড করার পরে বলছি, আপনারা একটু সাশ্রয়ী হোন, ১০টার জায়গায় পাঁচটা বাতি জ্বালান। সে কারণে আমরা বলছি, অনেক দেশে রেশনিং করে দিয়েছে। জাতিসংঘ থেকে বলছে, আগামী সময়গুলো খারাপ সময় যাবে। আমরা কীভাবে মোকাবেলা করব সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই প্রস্তুতির মধ্যে একটা পার্ট হল আমরা কতটুকু সাশ্রয় করতে পেরেছি।
খারাপ সময়কে ‘খারাপভাবেই’ মোকাবিলা করতে হয় মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিকল্প পাওয়ার প্ল্যান্ট আসবে, কয়লার পাওয়ার প্ল্যান্ট, কিন্তু কয়লা আমাদের আমদানি করতে হবে। সেখানেও দাম বেড়ে গেছে। আমাদের যে গ্যাস আছে সেই গ্যাস মাত্র ২৩০০ ঘনফুট, আমাদের দরকার হল ২৭০০ থেকে ৩৪০০ ঘনফুট; বাকি গ্যাসের তো আমাদের আমদানিতে যেতেই হবে। স্পট মার্কেটেও দাম বেড়ে গেছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে ইন্ডাস্ট্রিতে যে গ্যাস দিতাম, এ বছরও তাই দিচ্ছি। তাহলে এই বছর শর্ট হল কেন? কারণ বিদ্যুতের ডিমান্ড বেড়ে গেছে গ্যাসে। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিও বেড়েছে। খারাপকে খারাপভাবে ফেইস করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি এর থেকে খারাপ পরিস্থিতি যেন না হয়।
পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দাবি করে বিপু বলেছিলেন, আমাদের অশাবাদী হতে হবে। পরিস্থিতি এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণে, আমরা সাশ্রয় করতেছি, সবারই কিন্তু কষ্ট হচ্ছে। আমরা ভাবছি মার্চ ফেব্রুয়ারি থেকে, যে কী করব, সুতরাং আমরা আশা করছি নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রয়ারিতে কোনো সমস্যা হবে না। আগের থেকে ভালো অবস্থা হবে।