Search
Close this search box.
হজযাত্রীদের হয়রানি প্রতারণ করলে কঠোর শাস্তি

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হজে যাওয়া জাহাজকে প্রমোদতরী হিসেবে ব্যবহার করেছেন জিয়াউর রহমান – প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হজে যাওয়া জাহাজকে প্রমোদতরী হিসেবে ব্যবহার করেছেন জিয়াউর রহমান - প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার – জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরা ব্যবস্থা বিষয়ক সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনটি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে অনেক উন্নত ও সহজ হয়েছে। হাজীদের সঙ্গে প্রতারণা করলে এজেন্সিগুলোকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে ওআইসির সদস্য হয়। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত হয়। এরপরেই জাহাজে করে দেশ থেকে হজে যাওয়া যেত। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেই জাহাজকে প্রমোদতরী হিসেবে ব্যবহার করেছেন জিয়াউর রহমান। শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী ধারন করে সকল প্রকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ রুখে দিতে হবে।

তিনি বলেন, ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও শান্তির ধর্ম। ইসলামের আদর্শ ধারণ করে সমাজ থেকে হিংসা বিভেদ সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও অশিক্ষা দূর করে উন্নত সমাজ গড়তে হবে। ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে যেন না ব্যবহার করা হয়। হজযাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে যাবেন সেখানকার আইন মেনে চলবেন। হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবের যে প্রশংসা বাংলাদেশ পেয়েছে তা যেন অব্যাহত থাকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আল্লাহর ঘরের মেহমানদের নিয়ে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবসময় সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে হজে গিয়েছি। তবে সেখানে কতো সমস্যা হয় তা আমি নিজের চোখে দেখেছি। সে থেকেই হাজীদের কষ্ট কমাতে কাজ করেছি। সৌদি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এখন হজ ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বায়তুল মোকারম যেখানে রয়েছে, সেই জায়গা দিয়েছেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ব ইজতেমা যেন আমাদের দেশের তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্যও তিনি কাজ করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর হজ ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু উন্নতি হয়েছিল। পরে আট বছর ক্ষমতায় না থাকার সময় হজ নিয়ে অনেক খেলা হয়। আল্লাহর রহমতে দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকায় এখন হজ ব্যবস্থাপনা বিশ্বমানে উন্নত করতে পেরেছি, ই-হজ ব্যবস্থা চালু করেছি।

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে আসুন সমাজ থেকে অন্ধকার, বিভেদ-হানাহানি, কুসংস্কার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করি এবং ইসলামের অপব্যাখ্যাকারীদের প্রতিরোধ করি। তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা হয়েছে আলেমদেরও।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে আমাদের ইশতেহার ছিল ডিজিটিলাইজেশন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর হজ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করেছি। হজযাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের আন্তরিকতার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি সবসময় সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে হজে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে হাজীদের সমস্যাগুলো নিজে দেখেছি। সেখান থেকেই হাজিদের কষ্ট কমাতে কাজ করেছি। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্মেলন এবং মেলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলন ও মেলা শুরু হয়। ৩ দিনব্যাপী এ মেলা শেষ হবে শনিবার। এর আগে হজ ও ওমরা নিয়ে বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে কোনো সম্মেলন হয়নি। প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ৯৬ শতাংশ হজ এবং শতভাগ ওমরাহযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবে যান। অতীতে হজ ব্যবস্থাপনায় নানারকম ত্রুটি-বিচ্যুতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ও হাবের প্রচেষ্টায় হজ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এসেছে এবং শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। বেশিরভাগ হজ ও ওমরাহ এজেন্সির প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড ঢাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই এই মেলার মাধ্যমে সব হজ এজেন্সি সম্পর্কে সবাইকে পরিচয়ের ক্ষেত্র তৈরি করে দেওয়া সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া, প্রযুক্তি নির্ভর হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, হজযাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, হজকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যক্তিদের দৌরাত্ম্য ও মধ্যস্বত্বভোগী রোধ করা এবং হজ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদানসহ হজ ও ওমরা সম্পর্কে জানাতে এই মেলা আয়োজন করা হয়েছে। যাত্রী, হজ এজেন্সি ও অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে ই-হজ সিস্টেম ও মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আদান-প্রদানে দুটি সেমিনার করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ