স্টাফ রিপোর্টার – প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার বাবা জনগণের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও জনগণের জন্য রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়নি। বাংলাদেশের মাটি কখনোই ব্যবহার হবে না সন্ত্রাসী কাজে। বাংলাদেশ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নাই। তাদের কোনো সীমারেখাও নাই। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের নবনিযুক্ত হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। সাক্ষাতে এমন কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাতে প্রণয় ভার্মা বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। প্রতিবেশীদের নিয়ে ভারতের একটি নীতিমালা আছে বলেও জানান প্রণয় ভার্মা। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ভারতীয় হাই কমিশনার গভীর শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ছিল সেটা সত্যিই খুব অনুসরণীয়। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা জনগণের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও জনগণের জন্য রাজনীতি করি।
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেন, প্রতিবেশীদের নিয়ে ভারতের একটা পলিসি আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারে থাকা দেশ। যেকোনো কিছুতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বেশি।
ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সব সময়ই ভালো বন্ধু। সামনেও বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে হাই কমিশনার বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায়, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ-ভারত এক সঙ্গে কাজ করবে।
সন্ত্রাস প্রসঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়নি। বাংলাদেশের মাটি কখনোই ব্যবহার হবে না সন্ত্রাসী কাজে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনোই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় না। সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নাই। তাদের কোনো সীমারেখাও নাই।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং স্থল সীমান্ত ইস্যুতে দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশকে সমর্থন করার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক অমীমাংসিত বিষয় আছে যেগুলো আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তিস্তাসহ অন্যান্য যে অমীমাংসিত বিষয় আছে সেগুলো আমরা আলোচনা করেই সমাধান করতে পারি।
বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারী লিডারশিপের প্রশংসা করেন ভারতীয় হাই কমিশনার। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের কানেকটিভির ওপর জোর দেন হাই কমিশনার।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বিদ্যুৎ-জ্বালানি সেক্টরে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে এবং এ বিষয়ে নেপাল-ভুটানের সঙ্গেও কাজ করবে। বাংলাদেশ-ভারত সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা হয় সাক্ষাতে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ আহ্বান করেন শেখ হাসিনা বলেন, এখানে ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য ভালো সুযোগ আছে। আমরা ১০০ ইকোনোমিক জোন করছি। ভারত সেখানে বিনিয়োগ করতে পারো। চট্টগ্রাম ও মংলা পোর্ট দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যে সুযোগ ও সম্ভবনা সৃষ্টি করেছে তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
হাই কমিশনার ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্ব্যাসাডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। পরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নিয়মিত সাধারণ সভায় অংশ নেন। সভায় ট্রাস্টের কার্যক্রম বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং এর কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।