আওয়ামী লীগ সবসময়ই একটি স্মার্ট দল ॥ আওয়ামী লীগের হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশও আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হবে
স্টাফ রিপোর্টার – আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুধু দলের জন্য নয়, দেশের জন্যেও একটি মাইলফলক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলন দেশ এবং জাতির জন্য একটি নতুন বার্তা নিয়ে আসবে, যা আগামীর নির্বাচনের জন্য দেশকে নতুন নেতৃত্বের পথ দেখাবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সভায় মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই দেশে। তবে সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন শেখ হাসিনা।
বর্তমান মৌলবাদী সময়ের উত্থানে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব দেশের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তথ্যমন্ত্রী, বিএনপির কোনো সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলেই সংসদ অচল হয়ে যাবে না। তাদের পদত্যাগ নিয়ে ভাবে না সরকার।
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই একটি স্মার্ট দল। আওয়ামী লীগই সবসময় প্রথমে ভাবে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে কী করতে হবে। আওয়ামী লীগের হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশও আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হবে।
উদাহরণ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান বলেন, সেই পাকিস্তান আমলে বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার আন্দোলন আওয়ামী লীগের ঘর থেকেই শুরু হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ থেকেই জাতিকে অবহিত করা হয়েছে। জাতিকে প্রস্তুত করা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য।
মন্ত্রী বলেন, আর দুই দিন পরেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনটি শুধু দলেরই নয়, জাতীয় জীবনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের যে সম্মেলন হয়েছিল, সেটির সম্মেলন সংগীত ছিল ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ এবং সেই সংগীতই পরে আমাদের জাতীয় সংগীত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবার আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে দেশ গঠনে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, জাতির পিতার স্বপ্নের ঠিকানায়, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছাবার লক্ষ্যে বার্তা থাকে। এবারের সম্মেলনেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশের রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করা ও রাজনীতিতে যে অপশক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে যে লালন-পালন করা হচ্ছে, সেসব বিষয়েও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে। এভাবেই আওয়ামী লীগের সম্মেলন জাতীয় জীবনের মাইলফলক হয়ে ওঠে।
এবারের সম্মেলন অন্যবারের তুলনায় কম জাঁকজমকপূর্ণ হবে জানিয়ে দলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই নির্দেশনাই দিয়েছেন। আমাদের জাতীয় সম্মেলন সবসময় দুটি অধিবেশনে হয়। প্রথম অধিবেশন সকালে ও বিকালে কাউন্সিল অধিবেশন। এতে খরচ কম হয়। এরপরও আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখে এবারের সম্মেলনে অনেক কিছু থাকবে।
রাশিয়া হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে সে প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কূটনীতিকদের এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য বাংলাদেশেরই কয়েকটি রাজনৈতিক দল উদ্বুদ্ধ করে থাকে। তবে, বাংলাদেশ এখন কোনো দেশেরই মুখাপেক্ষী নয়, তাই কারও কথায় কিছু যায় আসে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারকে চাপে রাখতে মানবাধিকারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে কয়েকটি দেশ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ নিয়ে রুশ দূতাবাসের বিবৃতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত। রুশ দূতাবাস থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে অনেকগুলো কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু দেশ যখন সরকারকে চাপে রাখতে চেষ্টা করে, তখন তারা মানবাধিকারের ধুয়া তোলে। অর্থাৎ তারা সরকারকে চাপে রাখতে মানবাধিকারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে। রুশ বিবৃতিতে সেই কথাও এসেছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়, তারাই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু বাংলাদেশের একান্ত অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরেছে রুশ দূতাবাস। আমরা এমন বিবৃতি দেখিনি, তবে যারা ভিয়েনা কনভেনশন অমান্য করেন, তাদের বোধোদয় হওয়ার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, যখন বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করেন, তখন তা আমাদের স্বাধীনতার স্বকীয়তার জন্য হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায়। তবে যারা এই নাক গলান, তাদেরই দোষ দিচ্ছি না, বরং যারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে ছুটে গিয়ে তাদের পদলেহন করেন, তারাও দায়ী।
তিনি বলেন, কেবল পদলেহনই না, তাদের (কূটনীতিকদের) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। যারা এমনটি করেন, তারাই সত্যিকারের দোষী।