স্টাফ রিপোর্টার – শুক্রবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সে সঙ্গে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের ইনচার্জ মো. রাকিবুল হাসান জানান, শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
কনকনে শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে জেঁকে বসেছে শীত। বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কোথাও কোথাও বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। হেডলাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। হিম বাতাসে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষেরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে।
তিন দিনে চূয়াডাঙ্গায় জেলার আকাশে সূর্যের দেখা পায়নি মানুষজন। বৃহস্পতিবার সূর্যের দেখা মিললেও উত্তরের হিমেল হাওয়া আর রাত-দিনের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসার কারণে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া মানুষ। যাদের প্রতিদিন রুটি-রুজির সন্ধানে সকাল বেলায় কাজে বের হতে হয়, তারা প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে যাচ্ছে। দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক সবাই শীতে জবুথবু। বিভিন্ন স্থানে মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করছে।
এদিকে এসব শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রতিদিন জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থার পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিশেষ করে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ২১ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকার ২ হাজার ৮৮৮টি কম্বল কেনা হয়েছে। যেসব বিতরণের কাজ চলছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ জেলায় যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। আরও শীতবস্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে শীতজনিত কারণে হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ১৩টি বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৫০ জন। অপরদিকে প্রতিদিন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হচ্ছে শতাধিক।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ বলেন, ‘হাসপাতালে শয্যা সংকট। তবে পর্যাপ্ত স্যালাইন, ওষুধ আছে। রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এ তীব্র শীতে সবাইকে একটু সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্কদের একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। সবসময় শীতের পোশাক পরিধান করে থাকতে হবে। সমস্যা হলেই নিকটস্থ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে আসতে হবে।’