স্টাফ রিপোর্টার – লেখক, শিক্ষক, সমাজসেবক সুফিয়া খাতুন আর নেই। ‘জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে’ গ্রন্থের রচয়িতা, ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া সুফিয়া খাতুন শনিবার ভোর পৌনে চারটার দিকে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স ১০০ পেরিয়েছিল। বিদুষী লেখক, শিক্ষক ও সমাজসেবক ছিলেন সুফিয়া খাতুন। রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে বেলা দেড়টার দিকে নিজ বাড়িতে সুফিয়া খাতুনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বনানী কবরস্থানে স্বামী এ কে এম ওয়াঝিহ উল্লাহ্র কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। তিনি চার ছেলে, এক মেয়ে, নাতি–নাতনি, অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
তিনি ছিলেন সফল স্কুলশিক্ষক। ১৯৫০-এর দশক থেকে শুরু করে ২৩ বছর তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও তৎকালীন ক্যান্টনমেন্ট মডার্ন স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। সমাজসেবাধর্মী নানা কর্মকাণ্ডেও নিয়োজিত থেকে তিনি গড়ে তুলেছিলেন প্রাতর্ভ্রমণকারী সঙ্গিনীদের নিয়ে ‘উষা মৈত্রী’ সংগঠন। যুক্ত ছিলেন ‘হেমন্তিকা’ নামের সংগঠনের জন্মপ্রক্রিয়া থেকে। সমমনা আগ্রহী নারীদের সঙ্গে নিয়ে বৃদ্ধাবাস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছে ‘হেমন্তিকা’। দুটি সংগঠনের নামই তাঁর দেওয়া।
সুফিয়া খাতুনের জন্ম ময়মনসিংহে, খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের তীরে। তাই আত্মজীবনী ‘জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে’ বইতে নদীর মতো প্রবহমান জীবনের গল্প তুলে ধরেছেন তিনি। বইটির সময়কাল ১৯৩০ থেকে ২০০৩ সাল। এই বইতে এক সাধারণ নারীর অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প রচিত হয়েছে। দেশ ও বিদেশের নানা স্থানে জীবন কেটেছে তাঁর। শৈশব ও কৈশোরে বাবার কাছে, বিয়ের পর সরকারি কর্মকর্তা স্বামীর চাকরিসূত্রে এবং পরবর্তী জীবনে ছেলেমেয়েদের জন্য তিনি হেঁটেছেন পৃথিবীর পথে পথে।