স্টাফ রিপোর্টার – ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, সাংবাদিক ও রাজনীতিক এম জে আকবর বলেছেন, শেখ হাসিনার বিষয়ে ভারতে আমাদের নিজস্ব উপলব্ধি আছে। আমরা মনে করি, তার বাবা যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনিও বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। কলকাতায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার রাজনীতি’ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার নিয়ে ভারতের নিজস্ব উপলব্ধি আছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ভারত তার ভূমিকা পালন করবে। ‘ইন্ডিয়া ন্যারেটিভ’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে আলোচনার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’। এম জে আকবর অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের বলেন, বিশ্বের দিকে তাকান। কীভাবে বিশ্ব বদলে গেছে, তা দেখুন। অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের একজন এম জে আকবরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার রাজনীতির শিকার হচ্ছে। এর জবাবে আকবর বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ভারত তার ভূমিকা পালন করবে।
আকবর আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের বিপ্লব ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে। আর শেখ হাসিনার দ্বিতীয় বিপ্লব বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রকে পরাজিত করে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল না। সেটি একটি আদর্শিক যুদ্ধও ছিল।
এম জে আকবর বলেন, ফরাসি বিপ্লবের সময় থেকে জনগণ স্বাধীনতা, সাম্য আর ভ্রাতৃত্বের কথা শুনেছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ হলো গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও দারিদ্র্য বিমোচনে আধুনিকতা যোগ করতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন আধুনিক রাষ্ট্র হওয়ার পথে আছে।
বাংলাদেশে সামরিক অভ্যুত্থানের কোনো প্রশ্নই নেই বলে অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন এম জে আকবর। এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সামরিক একনায়কতন্ত্র ফেরানোর চেষ্টা করা হলে, তাদের জাতিসংঘের নানান নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে। সে কারণেই এ ধরনের একনায়কতন্ত্র ফেরার আশঙ্কা নেই।
অনুষ্ঠানে অপর আলোচক বাংলাদেশি কলামিস্ট সৈয়দ বদরুল আহসান বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উত্তেজনার বিষয়টি তুলে ধরেন। ভারত এ ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করতে পারে, তা জানতে চান। জবাবে আকবর বলেন, ভারত সরকার কী করবে তা নিয়ে হয়তো এভাবে প্রকাশ্য ফোরামে জানা যাবে না। তবে আমরা যা যা করার করব।
তিনি উদাহরণ দেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন তার নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজে করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম বাংলাদেশে আসতে আপত্তি জানিয়েছে, তখন ভারত ওই জাহাজ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে ভিড়তে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বদরুল আহসানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে মূল ইস্যু কী হতে পারে? জবাবে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতি দমনে সাফল্য-ব্যর্থতা বড় ইস্যু হতে পারে। এ সময় তিনি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপরও জোর দেন। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণে অনীহার বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছিল অনুষ্ঠানে। জবাবে বদরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে আইনের শাসন সমুন্নত করতে হবে।