Search
Close this search box.

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আ. লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন শেখ হাসিনা

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আ. লীগ প্রার্থী মনোনয়ন করবেন শেখ হাসিনা

মিথুন আশরাফ – রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনীত করার ক্ষমতা দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে দিয়েছে সংসদীয় দল। সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা অর্পণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তা সর্বসম্মতভাবে গৃহীতও হয়েছে। এখন শেখ হাসিনাই দলের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা সবাই মনোনীত প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা অর্পণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। এখন ঐক্যের প্রতীক শেখ হাসিনা সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটাবেন।

জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেবেন। এর আগে দলের প্রার্থী কে তা প্রকাশ করা হবে না। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সপ্তম সভার শুরুতে জাতীয় সংসদ ভবনের সভাকক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনে সকল শহীদসহ বিভিন্ন আন্দোলনে নিহত নেতাকর্মীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের এলাকামুখী হতে বলেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন কাজ চলছে, চলবে। কিন্তু মানুষের কাছে ভোট চাইতে হবে। সংসদ সদস্যরা যে উন্নয়ন কাজগুলো করেছেন, তা এলাকায় লিফলেট আকারে জানাতে হবে। ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। সবাইকে উন্নয়ন কাজ সম্পর্কে জানাতে হবে।

সভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে কোন দুর্নীতিপরায়ণ লোক দলের প্রধান হতে পারবেনা। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া দুইজনই দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মঙ্গলবারই আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী চূড়ান্ত নাও হতে পারে। তাই হলো। সংসদীয় দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীই রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করবেন।

পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন আবদুল হামিদ। আর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আর টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ করতে হবে। সে হিসেবে, নির্বাচন কমিশন তফসিলও ঘোষণা করেছে।

তফসিল অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে ভোট গ্রহণ করা হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। এখানে ভোটার খোদ সংসদ সদস্যরা। আগ্রহী প্রার্থীরা ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। একাধিক প্রার্থী থাকলে ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ভোট গ্রহণ হবে। সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। আর যদি একাধিক প্রার্থী না থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি পদের জন্য যাকে চূড়ান্ত করেছে, তিনিই মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে চূড়ান্ত হয়ে যাবেন, তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হবেন।

নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।

যেহেতু জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, তাই ধরে নেওয়া হয়, যাকে মনোনীত করা হবে তিনিই নির্বাচিত হবেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই হবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ