Search
Close this search box.

সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে পদত্যাগের ঘোষণা ইসি আলমগীরের

সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে পদত্যাগের ঘোষণা ইসি আলমগীরের

স্টাফ রিপোর্টার – আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। নির্বাচন নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসি আলমগীর বলেন, নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে, আমরা গ্যারিন্টি দিচ্ছি। আমরা যতক্ষণ আছি, এই চেয়ারে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাব।

যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, কম্প্রোমাইজ করতে হয়। তখন কী করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন আমাদের এই চেয়ারে দেখবেন না। আমরা যে কাজের জন্য শপথ করেছি, সেটা যদি না-ই করতে পারি তাহলে এই চেয়ারে থাকব কেন?

এটি আপনার একার মতামত কি না জানতে চাইলে ইসি বলেন, আমাদের কমিশনে যারা আছি সকলের মনোভাব এরকমই। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না এটা বিশ্বাস করি না। আপনারা যদি হাইপোথিটিক্যালি বলেন যে, এটা সম্ভব না। তখন আমরা সে দায়িত্ব পালন করব না।

প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দায়িত্ব থেকে সরে যাব। তাহলে কি সমাধান হবে? জানতে চাইলে বলেন, সেটি তারা দেখবেন।

কম্প্রোমাইজ করবেন না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, কম্প্রোমাইজ করব না। কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।

‘দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে না’ – এই ধারণা ভাঙার দায়িত্ব কার – এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা ভাঙার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। এখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ বিষয়টাতে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানও সে দায়িত্ব আমাদের দেয়নি।

দায়িত্ব শতভাগ পালনের অঙ্গীকার করে ইসি আলমগীর বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা। নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন, তারা স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমতো পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। ভোট গণনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, নির্বাচনের ফলাফল যাতে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় ভোটারদের ইচ্ছার, সেটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সে দায়িত্ব পালনের প্রতি আমাদের শতভাগ অঙ্গীকার রয়েছে। আমরা সেটা করব। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি যে, ধরনের সরকারই থাকুক না কেন, বর্তমান ইসি শততাগ সৎ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে।
এটা তো বিরোধী পক্ষ মূল্যায়ন করছে না – এই বিষয়ে তিনি বলেন, তারা কেন করছেন না তারাই ভাল বলতে পারবেন। তবে আমাদের এক বছরে কার্যক্রম দেখে তারা কি বলতে পারবে আমরা নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করেছি? অথবা দুই প্রার্থীর প্রতি আচরণ দুই রকম হয়েছে?

দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ভোট করা সম্ভব কি না প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, কমিশন চাইলে সেটা সম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশন কতটা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি এবং সেটা আমাদের ইচ্ছা আছে, অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

অতীতে কেন পারেনি সেটা অতীতের কমিশন বলতে পারবে। আগের কমিশন আর বর্তমান কমিশনের লোক ভিন্ন।’ তাদের আচরণের সঙ্গে এই কমিশনের আচরণ এক হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংকট দূর করার জন্য সংলাপের দায়িত্ব কে নেবে জানতে চাইলে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সংবিধান কি সেই দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে? আমাদের বিভিন্ন অংশীজন, সুশীল সমাজের মতামত নেওয়ার ক্ষমতা তো দেওয়া আছে। এখন আর হচ্ছে না। হয়তো পরবর্তীতে হতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। অর্থাৎ যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি অথবা প্রয়োজন সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনেন জন্য, তাদের সঙ্গে তো আমরা নির্বাচনের আগে হয়তো আবারও হতে পারে। সেটা তো থাকতে পারে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা তো সব সময় আছে, যে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময় যে কোনো দলের সঙ্গে বসে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ইসি আলমগীর বলেন, গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন তারা বড় উদাহরণ। প্রশাসন যারা কাজ করেছিলেন, যাদের গাফিলতি পাওয়া গেছে বা যারা অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি এবং সেটা মনিটরিং করেছি। কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইত্যাদি আমরা দু এক সপ্তাহ পরপরই মনিটর করছি। প্রার্থীর সংশ্লিষ্টতা তো আমরা বলতে পারি না। যারা জড়িত ছিল তারা প্রার্থীর কথা বলে নাই। তারা কেন বললো না সেটাই তো রহস্য। তাদেরকে বারবার প্রশ্ন করা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা বারবার প্রশ্ন করেছেন এমন কাজ করলেন কেন? তারা বলেছেন, আমরা স্বেচ্ছায় করেছি। এখন তারা যদি বলেন স্বেচ্ছায় করেছি। তারা যদি কারো নাম বলতো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম। এখানে তো অনুমান, আন্দাজ ভিত্তিক কোনো অ্যাকশন নেওয়া যায় না। যেকোনো প্রশাসনিক, বিচারিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে আপনাকে যা তদন্তে প্রমাণিত হবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ