স্টাফ রিপোর্টার – সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, জিল্লুর ভাই আমাদের কাছে এখনও অনুকরণীয়। দুঃসময়ে কীভাবে অটল পর্বতের মতো দণ্ডায়মান থাকতে হয় সেটা শিখিয়েছেন। তিনি ছিলেন নির্লোভ, মিষ্টভাষী ও কর্মীবান্ধব সংগঠক। নতুন প্রজন্মের কাছে তার জীবন ও কর্ম তুলে ধরতে হবে। তাতে আগামী প্রজন্ম রাজনীতিতে আসবে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, জিল্লুর ভাই কথা কম বলতেন। কিন্তু কাজের কথা একটিও বাদ দিতেন না। ১/১১ সময়ে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সুধাসদন থেকে গ্রেফতার করা হয়, তখন দল থেকে আমাদের ভূমিকা কী হবে এটা নিয়ে আমরা একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করতাম। সেসময়ে জিল্লুর ভাই ছিল হাইকোর্টে একমাত্র ভরসা। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণ সভায় তার সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে এমন কথা বলেছেন মতিয়া চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সকাল ১১টার দিকে আলোচনা সভার আয়োজন করে জিল্লুর রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটি। সংগঠনের সভাপতি এম এ করিম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুলসহ অনেকে। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন মশিউর রহমান।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, যেদিন নেত্রীকে গ্রেফতার করা হলো, তখন সারারাত টিভিতে দেখতে থাকি কী চলছে। আর এদিকে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম কী করা যায়। সকাল থেকেই কোর্টপ্রাঙ্গণে লোক আর লোক। তখনকার সরকার ও কোর্ট বলল, নেত্রীকে অন্তরীণ থাকতে হবে। সেই পরিস্থিতিতে জিল্লুর ভাইকে সভাপতির দায়িত্ব দিলেন শেখ হাসিনা। জিল্লুর ভাই আইভি শূন্য জীবনেও দলের জন্য পরিশ্রম করে গেছেন নিরলসভাবে।
সংসদ উপনেতা বলেন, জিল্লুর ভাই যেকোনো সময়ে যেকোনো সংকটে দায়িত্ব নিতে ছিলেন পটু। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। তিনি পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ ছিলেন বলেই আজ আমরা তার সম্পর্কে এতো কথা বলছি। এখনও প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই মিটিং এর মধ্যে বলেন, জিল্লুর চাচা থাকলে আমাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারতেন।
মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, জিল্লুর ভাই ছিলেন অত্যন্ত সাংগঠনিক ব্যক্তি। তার এই দক্ষতার কারণেই বঙ্গবন্ধু তাকে মূল দলের সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন। জিল্লুর ভাইকে এজন্যই আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তার ১/১১ সময়ে দল ও দেশের জন্য অনেক অবদান রেখেছিলেন।
স্মৃতিচারণ করতে তিনি বলেন, জিল্লুর রহমান একজন রাজনৈতিক কর্মী থেকে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তার চরিত্র, আদর্শ ও কর্মজীবন সত্যি অনুকরণীয়। তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার জীবনের দিকগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির সমালোচনা করে মহিউদ্দিন বলেন, বিএনপির মহাসচিব যে সব কথা বলেন তা একদমই মিথ্যা। তারা আন্দোলনের কথা বলে কিন্তু ঈদের পর ঈদ যায়, তাদের আন্দোলন আর আসে না। ফখরুল সাহেব কোথায় গেল আপনাদের আন্দোলন? আপনাদের দলীয়ভাবে কোমর ভেঙে গিয়েছে। তারা নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে বিএনপিকে নির্বাচনের পথে আসার আহ্বান জানাই।
নুরুল আমিন রুহুল বলেন, আমি যখন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগরের সভাপতি ছিলাম, তখন আমরা ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করতে সর্বদা জিল্লুর ভাইয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করতাম। তিনি আমাদের সব সংকটে সাহস যোগাতেন। আমি মনে করি নতুন প্রজন্মের কাছে জিল্লুর ভাই অনুকরণীয় এক চরিত্র। তার মতো সৎ ও আদর্শবান মানুষ রাজনীতিতে বিরল।