Search
Close this search box.

আইনের মধ্য থেকেই অসহায় মানুষের পাশে থাকব– র‌্যাব ডিজি

স্টাফ রিপোর্টার- আইনের মধ্য থেকে যতটা পারা যায় অসহায় মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি  এম খুরশীদ হোসেন। র‌্যাবের দোরগোড়ায় সেবা নিতে এসে কেউ যাতে হতাশ হয়ে ফিরে না যায় সেদিকে নজর রাখতে বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের প্রতি আহবান জানান ডিজি।

তিনি বলেন, আইনের মধ্যে থেকে যতটুক সম্ভব সেবা দিতে হবে। আমরা শাসক না, সেবক হতে চাই। আমরা চাই নিরীহ, অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষকে আন্তরিকতা, যতটুকু ক্ষমতা তা দিয়ে সহযোগিতা করা। দেখবেন দিন শেষে, চাকরিজীবন থেকে অবসরে গিয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগবেন। কিন্তু যদি উল্টোটা করেন, মিসবিহ্যাভ করেন, তাহলে আপনার বিবেক আপনাকে কষ্ট দেবে।

র‌্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও র‌্যাব মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে সোমবার (২০ মার্চ) র‌্যাব মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, ক্যাম্প কমান্ডারসহ উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।

র‌্যাব সদর দপ্তরের শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমরা আজকে শহীদ পরিবারের কথা শুনেছি। আমরা হয়তো কিছু আর্থিক সহায়তা ও উপহার প্রদান করি। কিন্তু আমরা যে সন্তান পিতাহারা, যে স্ত্রী স্বামীহারা হয়েছেন তাদের শূন্যতা আমরা পূরণ করতে পারব না। তবে যারা শহীদ হয়েছেন তারা আমাদের অহংকার। আমাদের দায়িত্ব হবে, শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, সব ধরনের সহযোগিতা করা। উপকার যদি করতে নাও পারি, তাহলে আন্তরিকতার যেন কোনো ঘাটতি না থাকে।

অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, রবিবার দরবারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের অন্য কোনো চিন্তা নেই, ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমাদের ভরসা আমরা এই দেশেরই মানুষ। আমরা কাজ করি দেশের জন্য, মানুষের জন্য। সবার মধ্যে আস্থা তৈরি হয়েছে, র‌্যাব ভরসাস্থল, নিরাপত্তা-আস্থার প্রতীক, ভালোবাসার জায়গা। আমি চাই আমার প্রতিটি সদস্য এই আস্থা ধরে রেখে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, সমাজের যে অবস্থা, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে তা উপলব্ধি করি। সমাজের আসল চিত্রটা অন্য রকম। অনেকে ব্যবসা করে পুঁজি খাটিয়ে টাকা পাচ্ছে না, ফ্ল্যাট বুকিং দিয়ে ফ্ল্যাট পাচ্ছে না, জমির টাকা দিয়েও জমি পাচ্ছে না। আমাদের কাছে এলে আমরা বলি থানায় যান, জিডি করেন, মামলা করেন।

বাহিনীর সদস্যদের প্রতি খুরশীদ হোসেন বলেন, আমি বলব, অসহায় মানুষ আমাদের কাছে আসবে, আমরা শুনব, আইনের মধ্য থেকে যতটা পারা যায় অসহায় মানুষের পাশে থাকব। তবে আমার নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। আমি যেন সেই অসহায়ত্বকে পুঁজি করে আমার অন্য অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে না চাই। অসহায় মানুষকে কতটা সহায়তা করতে পারলাম সেটাই হবে আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আমি সবার কাছে আহ্বান জানাব, মানুষ যেন মনে করে র‌্যাবের কাছে পৌঁছালে কষ্ট, অভিযোগের কথা আমরা বলতে পারি।

র‌্যাবের কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলেও এ সময় জানান মহাপরিচালক। তিনি বলেন, আমি বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের খবর পেয়েছি, সিওদের কাছে গেলে কথা শোনে, কথা বলে, কিন্তু ক্যাম্প ইনচার্জরা তা শোনেন না, যা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমার শহীদ পরিবার শুধু না, যেকোনো প্রান্তের মানুষ যখনই কোনো ক্যাম্পে যাবে তাকে অবশ্যই অ্যাটেন্ড করতে হবে। ক্যাম্প কমান্ডারদের বলব, পরবর্তীতে আমি আর এই ধরনের অভিযোগ শুনতে রাজি না, যে, আপনি তাদের সঙ্গে কথা বলেননি, সহযোগিতা করেননি। কারণ আপনি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। অবশ্যই আপনাকে মানুষকে, পাবলিক হেয়ারিং দিতে হবে।

নিজের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, তিনি সারা জীবন ফিল্ডে, জেলা, রেঞ্জে পুলিশ সদরে কাজ করেছেন। পুলিশ সদরেও যখনই কেউ এসেছে তাকে স্টাফ অফিসারের মাধ্যমে তার কাছে গেছেন। তিনি তাদের কথা শুনেছেন। চেষ্টা করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলার এসপি, ওসিকে জানিয়েছেন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান খুরশীদ হোসেন। স্মরণ করেন র‌্যাবের শহীদ সদস্যদের। করোনাকালীন সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে র‌্যাবের জীবন উৎসর্গকারী ৮ সদস্যের আত্মার মাগফিরাতও কামনা করেন।

এ সময় তিনি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন সূচকে নিজেদের অগ্রগতির জন্য বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ