স্টাফ রিপোর্টার- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা চাই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমেরিকাও চায় স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।
বুধবার (৫ এপ্রিল) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন নিয়ে জাপানি চিত্রকলা ‘মাঙ্গা’ ফর্মে কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ওই হোটেলে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে জানতে চাইলে মোমেন সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। অবশ্যই বলব আমরা খুব লাকি। আমরা পর পর তিনবার তার দাওয়াত পেলাম।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন মহাসড়কের সঙ্গে আমেরিকা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। আর আমাদের সম্পর্কেরও উন্নতি হয়েছে। দুই বছর কোভিডের জন্য আমাদের আনাগোনা কম ছিল। আগামী পরশু যাব। তাদের দাওয়াত আমি সানন্দে গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু দেশ। তারা আমাদের বড় বিনিয়োগকারী দেশ। সেদেশ আমাদের অন্যতম রপ্তানি গন্তব্য। আমেরিকা একমাত্র দেশ, যারা কোভিডকালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১০০ মিলিয়নের বেশি টিকা দিয়েছে। আমরা টিকা অন্য জায়গা থেকে কিনেছি। আর তারা বাড়িতে টিকা পৌঁছে দিয়েছে। রোহিঙ্গারা আসার পর যে দেশ সবচেয়ে বেশি পাশে দাঁড়িয়েছে, সেটি আমেরিকা। অন্য দেশও অবশ্য সহায়তা করছে। তবে আমি সেই দেশে যাচ্ছি, এসব কাজের অবশ্যই প্রশংসা করবো।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কী আলাপ হবে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, বাণিজ্য যেন বাড়ানো যায়, সেই নিয়ে আলাপ হবে। আর তারা চায়, বাংলাদেশে যেন স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের নীতিও নির্বাচন। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছি।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছে গণতন্ত্র সমুন্নত করার জন্যই। সে কারণে আমাদের গণতন্ত্র শেখানোর প্রয়োজন নেই। এটা আমাদের হাড়ে হাড়ে। আমাদের রক্তেই গণতন্ত্র। আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন। আমেরিকাও চায় স্বচ্ছ নির্বাচন। এতে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি। আগে ভুয়া হতো। এখন যেন না হয়, সেজন্য আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। তারাই ইলেকশন করবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো স্বচ্ছ-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান। সরকার অবশ্যই কমিশনকে সাহায্য করবে। আর শুধু সরকার সাহায্য করলে হবে না। জনগণ, সব রাজনৈতিক দল, মিডিয়া সবাইকেই সাহায্য করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের সাহায্য ছাড়া সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। আর আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। কারো অন্য ধরনের কোনো চিন্তা থাকলে, তা ভুল চিন্তা। আমরা সংবিধান ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের আমন্ত্রণে আগামী ৭ এপ্রিল দেশটিতে সফরে যাচ্ছেন ড. মোমেন। সেখানে ১০ এপ্রিল দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।