স্টাফ রিপোর্টার – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ইন্ধনে বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে যুবলীগ। যুবলীগ নেতারা বলেন, দেশকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এসময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মাঠে থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুবলীগ নেতারা।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ রোববার পুঠিয়ায় বিএনপির সমাবেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন। রবিবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিক্ষোভের কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’র প্রতিবাদে সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। রাজধানীতে প্রতিটি সংগঠন কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচি পালন করে। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদ এক দফার নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তার এ ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ধারাবাহিকতায় সকালে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
বিকাল ৪টায় মোহাম্মদপুর টাউন হলে একই কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, যেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন। এ ছাড়া যুব মহিলা লীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ রাজধানীতে আলাদা আলাদাভাবে এ কর্মসূচি করে। জেলা উপজেলা ও মহানগরেও সবগুলো সংগঠন অনুরূপ কর্মসূচি পালন করে।
গত শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাই স্কুল মাঠে এক জনসমাবেশে আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, ‘আর ২৭ দফা, ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। এক দফা; শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা করব।’
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্য জনসভায় হত্যার হুমকির প্রতিবাদে দুপুরে শিববাড়ি দলীয় কার্যালয় থেকে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে। প্রতিবাদ মিছিলে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সকল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক আহবায়ক যুগ্ম আহ্বায়ক ভাতৃপ্রতিম অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কর্মী বৃন্দ এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষের সকল শক্তির মানুষ এবং ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম আহবায়ক (১) পাঠান রাসেল বিক্ষোভ মিছিল করেন।
নেত্রকোণায় বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া জেলা বঙ্গবন্ধু আওয়ামী পরিষদের পক্ষ থেকে আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
বিএনপি সরকার পতনের এক দফার নামে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে রংপুরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার (২২ মে) রংপুর মহানগরীর বেতপট্রি কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জেলা যুগ্ম আহবায়ক মাজেদ আলী বাবুল, সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, মির্জা ফখরুল শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের এক দফা দিয়ে প্রকারান্তরে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ প্রকাশ্যে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিএনপি যে খুনের রাজনীতি করে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি এভাবে নৈরাজ্যের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। বিএনপি জামাতকে রুখে দিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জনগণ মাঠে নেমেছে। বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। কর্মসূচিতে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
নোয়াখালীতে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে জেলা শহর মাইজদীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে এক সংক্ষিপ্ত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্যে রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদুল্লাহ খান সোহেল। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে হুমকিদাতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে অতি দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু, শহর আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক মিঠুন ভট্রসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার দুপুর ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আগের স্থানে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভে জেলা আওয়ামী লীগ,স্বেচ্ছাসেবকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অংশ নেয়।
পরে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহা. সাদেক কুরাইশী, সহ সভাপতি মাহবুবুর রহমান খোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আ স ম গোলাম ফারুক রুবেল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অরুনাংশু দত্ত টিটো, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নজমুল হুদা শাহ এ্যাপোলো, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুনাম, যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল, সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার, ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে বিএনপির সেই নেতাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন।
নোয়াখালীতেও আবু সাঈদ চাঁদের বক্তব্যের প্রতিবাদ করে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। জেলা, থানা, পৌর আওয়ামী লীগসহ শ্রমিক লীগের আয়োজনে বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়ও আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে। দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয় চত্বরে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।