স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সারাদেশে ৫ হাজার ৯২৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এবার ডেঙ্গুতে সারাদেশে ৩৮ জন মারা গেছে। ঢাকায় ২৯ জন এবং ঢাকার বাইরে নয়জন মারা গেছে। চট্টগ্রামে ছয়জন, বরিশালে দুজন, ময়মনসিংহে একজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ডেঙ্গু ছাড়া তাদের অন্য কোনো রোগ ছিল কি না সেগুলো যাচাই করা হবে। ক্যানসার আক্রান্ত ছিল কি না, নাকি আগে থেকেই মৃত্যু পথযাত্রী ছিল, এগুলো নজরে আনতে হবে। আমাদের জানতে হবে কোথায় ঘাটতি আছে। আমরা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা স্বীকার করি। আমরা জনগণকে অঙ্গীকার করেছি ভালোভাবে জীবনযাপনের জন্য আমরা সম্ভাব্য সব সুযোগগুলো কাজে লাগাব। সিঙ্গাপুরে ৩৫৯৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে আছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে দুই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সেই তুলানায় কী কমাতে পেরেছি বলে মনে হয় না।কোথাও যদি ঘাটতি থাকে কেউ তা ধরিয়ে দিলে সেটিও আমলে নেব। সন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই। একটি লোকও যদি আক্রান্ত না হত, একজন লোকও যদি মারা না যেত তাহলে আমি সন্তুষ্ট হতাম। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করি-একটা লোক মৃত্যুবরণ না করুক আর আক্রান্ত না হোক।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশা নিধন, প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হচ্ছে। এর বাইরে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। জবাবে মন্ত্রী বলেন, এর বাইরে করার মতো আর কিছু আছে কি না? মশা নিধনের জন্য যতগুলো অপশন রয়েছে তার সবগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে। টেলিভিশনের মাধ্যমে টিভিসি প্রচার করা হচ্ছে। খালে ময়লা নেই এ কথা আমি দাবি করতে পারবো না। সাধরণত এডিস মশার জন্য খালে হয় না।
ঈদের সময় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের জন্য যে টিম আছে সে টিমকে কাজে লাগাতে হবে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ রাখা আছে, সেগুলোকে ব্যবহার করবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ যন্ত্র কেনা আছে। একেকটি সিটি করপোরেশনে তিন হাজার করে লোকবল নিয়োগ দেওয়া আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মশক নিধনের জন্য যেসব অপশন আছে তার সবগুলো আমলে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনে সেল গঠন করা হয়েছে, সেখানে কেউ কোনো পরামর্শ দিলেও তা আমলে নেওয়া হবে।
ঢাকা শহর এবং সারা দেশের বসবাসরতদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ঈদের সময় আঙ্গিনায় কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করে নেবেন। এয়ারকন্ডিশন ও ফ্রিজের নিচে যেন পানি জমা না থাকে। খাটের নিচে যেন পানি জমা না থাকে। টায়ার, টিউবসহ যেসব জায়গায় পানি জমে থাকতে পারে সেখানে এডিস মশারজন্য হতে পারে, সেসব জায়গায় যেন জমে থাকতে না পারে। কারণ তিন দিনের জমা পানিতে এডিস মশার ডিম থেকে লার্ভার জন্ম হয়। তিন দিনের ভেতর যদি জমা পানি ফেলে দেই তাহলে এডিস মথা থেকে রক্ষা পেতে পারি।