রাতের মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়লেও ভোর থেকে সেটি কমে এসেছে। যানবাহন কম আসায় ধারণা করা হচ্ছে গাড়িগুলো টাঙ্গাইল বা সাভারের দিকে যানজটে আটকে থাকতে পারে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নাড়ির টানে প্রিয়জনদের কাছে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ।
তবে উত্তরবঙ্গগামী সিরাজগঞ্জের যানজট আতঙ্কে থাকা ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়ক স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকাগামী লেনে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে মুলিবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তায় ধীরগতি রয়েছে। মূলত টোল প্লাজায় টোল আদায়ে বিলম্ব হবার কারণে এই ধীরগতি তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানান হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল কবীর ও সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক পরিদর্শক প্রশাসন সালেকুজ্জামান খান সালেক।
হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা থেকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল কবীর বলেন, রাত থেকে মহাসড়কে গাড়ির চাপ অনেকটা বেড়েছে। তবে ভোর থেকে যানবাহনের চাপ আবার কমেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু বেশি যানবাহন চলাচল করছে। তবে কোথাও কোনো যানজটের মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। এ ছাড়াও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা তৎপর রয়েছি।
সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, সারারাত মহাসড়কে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ ছিল। কিন্তু ভোর থেকে যানবাহনের চাপ কমে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে টাঙ্গাইল বা সাভারের দিকে যানবাহনগুলো যানজটে আটকে থাকতে পারে। এ জন্য এদিকে চাপ কম। তবে চাপ বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকাগামী লেনে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ের কারণে সেতুর পশ্চিম পাড়ে ধীরগতি তৈরি হয়েছে। যা মুলিবাড়ি রেলগেট এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। তবে টোল আদায়ে বিলম্ব না হলে এটাও কেটে যাবে।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে চাপ থাকলেও উত্তরের পথে কোনো যানজট বা ধীরগতি নেই। আশা করছি উত্তরবঙ্গের ঘরে ফেরা মানুষের গত ঈদের মতো এবারের ঈদযাত্রাও নির্বিঘ্ন হবে। এছাড়া যানবাহন ও ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে ও সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছি।
এবারের ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে জেলা পুলিশ, জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে রোববার (২৫ জুন) ভোর ৬টা থেকে প্রায় ১ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যা মোতায়েন থাকবে টানা ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন পর্যন্ত। সিরাজগঞ্জের যানজট আতঙ্কে থাকা ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়কের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে জেলা পুলিশ, জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে থানা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর হয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর দিয়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের ২২ জেলার মানুষ চলাচল করে। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৭-১৮ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে ঈদের সময় এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫-৪৫ হাজারে। এই সময়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতি বছরই যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে গত ঈদুল ফিতরে তেমন কোনো যানজট সৃষ্টি হয়নি এই মহাসড়কে। এই ভোগান্তি এড়াতে এবার ঈদযাত্রায় নলকা আন্ডারপাস ও বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হয়েছে।