ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর আশাব্যক্ত করেছেন, বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচনের আগে-পরের পরিবেশে নজর রাখবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা জানান তিনি।
একই দিনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঙ্গেও ইমন গিলমোরসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মানবাধিকারের আরও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর। ছবি: সংগৃহীত
ইমন গিলমোর বলেন, আমরা আশা করছি, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হবে বলেও প্রত্যাশা করছি। এরই মধ্যে ইইউর প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল ঢাকা সফর করেছেন। এখন বাংলাদেশে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ ব্যারেলের হাতে।
ইইউর এই মুখপাত্র বলেন, মোট কথা- সুশীল সমাজের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ দরকার বলে আমরা জানিয়েছি। যেকোনো দেশের সুশীল সমাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও মুক্ত গণমাধ্যম নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মানবাধিকার। আমরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
বাংলাদেশের মানবাধিকারকে আরও শক্তিশালী করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোর দিচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা আমি তুলে ধরেছি। বাংলাদেশ সরকার যে এ আইনে কিছু সংশোধনী আনার পরিকল্পনা নিয়েছে, সে সম্পর্কে আমি অবগত। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আলোচনা করছে। আইনটি সংশোধন হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংশোধনী দেখার সুযোগ পাবে বলেও প্রত্যাশা করেন ইমন গিলমোর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঙ্গে বৈঠককালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর। ছবি: সংগৃহীত
তিনি জানান, সৌজন্য সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ইউরোপের বাজারে পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধার (জিএসপি) কারণে অস্ত্র বাদে যে কোনোকিছু রফতানি করতে পারবে বাংলাদেশ। এতে বাংলাদেশকে ইউরোপে কোনো শুল্ক দিতে হবে না। বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল সোমবার (২৪ জুলাই) ঢাকায় সফরে আসেন ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর। বাংলাদেশে এটি তার দ্বিতীয় সফর। ঢাকা সফরকালে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি হিসেবে মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইমন গিলমোর। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন।