Search
Close this search box.

সরকারপ্রধানকে বরণে প্রস্তুত রংপুর

সাড়ে চার বছর পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ঘিরে রংপুরজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রশাসনিক পর্যায়েও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো রংপুর শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে।

সরেজমিনে নগরী ঘুরে দেখা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে রংপুরের অলিগলি পোস্টার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। প্রধান প্রধান সড়কে বড় তোরণ শোভা পাচ্ছে। প্রতিটি বিলবোর্ডে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে সপ্তাহ ধরে। জনসমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে জোরেশোরে। সড়কে লাগানো হয়েছে বহু মাইক। সবমিলিয়ে প্রস্তুতির প্রায় শেষ পর্যায়ে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সরকারপ্রধানের বিভাগীয় জনসভায় রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি থেকে এসব মানুষ আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জনসভা সফল করতে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভা, জেলা মহানগরে দফায় দফায় মতবিনিময় করা হয়েছে। অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বর্ধিত সভা, মতবিনিময় সভা চলছে প্রতিদিন।

প্রায় এক সপ্তাহ থেকে রংপুরে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী। আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে রংপুরে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ। প্রতিদিন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মহাসমাবেশ সফল করতে মিটিং মিছিল করছেন। অলিগলি চলছে মাইকিং আর উন্নয়নের গান। রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সিটি করপোরেশনের থানা কমিটি থেকেও চলছে পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ।

২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার রংপুরে অনেক উন্নয়ন করেছে। রংপুর বিভাগ, রংপুর সিটি করপোরেশন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা, রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমি স্থাপন, আদালতের বহুতল ভবন, সিভিল সার্জনের নতুন ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বিভাগীয় সদর দফতর, রংপুর শিশু হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল, আধুনিক পুলিশ লাইন্স নির্মাণ করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রংপুর এখন উত্তরাঞ্চলের রাজধানী। এছাড়া রংপুরে মেরিন একাডেমি, উপজেলাগুলোতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে।

সেই সঙ্গে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ তলাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র‌্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরসহ বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যবদলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, টানা তিনবার ক্ষমতায় থেকে প্রধানমন্ত্রী রংপুরকে যেভাবে উন্নয়নের মোড়কে সাজিয়েছেন, তা বিগত কোনো সরকার করতে পারেনি। রংপুরে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। এখন মঙ্গাপীড়িত রংপুর বলা হয় না, কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতিশ্রুতি পূরণের মধ্য দিয়ে রংপুর থেকে মঙ্গা দূর করেছেন। মানুষের ভাগ্যবদলের সঙ্গে সঙ্গে তিনি রংপুর অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্তন করেছেন। রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ উজ্জীবিত। আন্তরিকতার সঙ্গে প্রধানন্ত্রীকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত তারা।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, আমাদের কাছে ২ আগস্ট ঈদ উৎসবের দিন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করে তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। তিনি দায়িত্ব নিয়ে রংপুরের উন্নয়ন করেছেন।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সে কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুরের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিমুখ করবে না। সাধারণ মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিউর রহমান সফি বলেন, রংপুরের মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অপেক্ষায় রয়েছে ২ আগস্টের জন্য। তারা নিজ উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাবেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে এক নজরে দেখবেন। রংপুরবাসী উপস্থিত থেকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান। কেননা রংপুরের যত উন্নয়ন সবই প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ