দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। সোমবার (২৮ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল আলমের আদালতে এই মামলার চার্জশুনানির দিন ধার্য ছিল।
এদিন তার পক্ষে আইনজীবী চার্জশুনানির জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২ অক্টোবর পরবর্তী দিন রেখেছেন।
একইসঙ্গে সম্রাটের আইনজীবী এদিন স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী এ তথ্য জানান।
গত বছর ১১ মে সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন একই আদালত। ওইদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ওই বছর ১৮ মে সম্রাটের জামিন বাতিল করে আদেশ দেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদেশে সম্রাটকে সাতদিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী সম্রাট পরে ২৪ মে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। আদালত জামিন শুনানি না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ এরপর গত বছর ২২ আগস্ট এই মামলায় দ্বিতীয় দফায় জামিন পান সম্রাট।
জামিনে থাকাকালে গত ১ জুন বিদেশে চিকিৎসা নিতে সম্রাটকে পাসপোর্ট প্রদানের অনুমতি দেন একই আদালত। দুদক সেই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গেলেও তার আগেই ভারত যান তিনি। পরে অবশ্য গত ২৪ জুলাই তিনি দেশে ফিরেন।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এদিন দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমণ্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।