Search
Close this search box.

ডিম আমদানির অনুমতির পরেও দামের প্রভাব কমেনি বাজারে

বাজার নিয়ন্ত্রণে ডিমের দাম বেঁধে দেয় দেওয়ার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে ভারত থেকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু বাজারে ডিম আমদানির অনুমতি তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি করা ডিম বাজারে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে। কেউ কেউ এটাও বলছেন, আমদানি করার ডিম চাহিদার তুলনায় অতি সামান্য। এ ডিম বাজারে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।

বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য শুরুতে চার কোটি ডিম আদমানি করতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে দেশে প্রতিদিনের ডিমের চাহিদা চার কোটি। অর্থাৎ আমদানি করার ডিম দিয়ে দেশের এক দিনের চাহিদা পূরণ হবে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ডিম দেশে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে। এসব ডিম সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি পিস ১২ টাকার মধ্যে বিক্রি হবে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে রামপুরা হাজীপাড়া ও মালিবাগের বিভিন্ন বাজার ও পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। প্রতি হালি ৫০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে কোথাও কোথাও ৫২ টাকা দরেও বিক্রি করতে দেখা গেছে ডিম। অথচ সরকার নির্ধারিত দাম হচ্ছে প্রতি হালি ৪৮ টাকা।

সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করছেন না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতারা পাইকারি বাজার থেকে কম দামে ডিম কিনতে না পারার কথা বলছেন।

সবুজ ইসলাম নামে এক ডিম বিক্রেতা বলেন, গতকাল আড়ৎ থেকে ১০০ পিস ডিম কিনেছি ১ হাজার ১৬০ টাকা দরে। তার সঙ্গে অন্যান্য খরচ মিলে ১০০ ডিমের দাম গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২১০ টাকা। তার মানে একেকটা ডিমের দাম ১২ টাকা ১০ পয়সা। তাহলে কীভাবে ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করবো। বেশি দামে কিনে আমরা লোকসান দিয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারি না।

আরও কয়েকজন খুচরা ডিম বিক্রেতা জানান, সরকারের দাম নির্ধারণ কিংবা আমদানির খবরের পরেও পাইকারি বাজারে ডিমের দাম সামান্যও কমেনি। বরং বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কারণে ডিম বিক্রি কমে গেছে এবং সরবরাহেও কিছুটা টান পড়েছে। এমন পরিস্থিতি চললে ডিমের দাম কমবে না বরং বাড়বে।

মালিবাগ বাজারে হোসেন নামে একজন বলেন, আড়তে দাম বেশি থাকার পরও যদি আমাদের ১২ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বাধ্য করে তাহলে দোকান বন্ধ করে দেবো। কারণ আমরা কিনতে পারছি না কিন্তু সরকার অভিযান চালিয়ে কম দামে ডিম বিক্রি করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

ডিমের পর আলু ও দেশি পেঁয়াজ বেচাকেনার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা গেলো, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আলুর কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। যদিও সরকারের বেধে দেওয়া দাম প্রতি কেজি আলু ৩৬ এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা।

সরকারের হিসাব বলছে, ডিমের উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন কম ও চাহিদা বেশি বলেই দাম বেড়েছে। সামান্য ডিম আমদানিই কার্যকর কোনো কৌশল নয়। দাম নির্ধারণ করে দিয়েও লাভ হবে না। প্রান্তিক খামারিদের সহযোগিতা বাড়িয়ে ডিমের উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলছেন তারা।

এরআগে ২০১২ সালের জুনে ডিমের হালি ৪০ টাকায় উঠেছিল। তখন সরকার কিছু ডিম আমদানি করে। তাতেই দাম কমে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ