Search
Close this search box.

৬০০ আইএসপির সেবা বন্ধ, ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকবে ১ সপ্তাহ

রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ডাটা সেন্টারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুড়ে গেছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি)। এতে সারাদেশের অন্তত ছয়শ’ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট সেবা। যেগুলো চালু আছে, সেগুলোরও ধীরগতি।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘যতটুকু খবর পেয়েছি লেভেল থ্রি, ম্যাক্স হাব, আমরা নেটওয়ার্কস, আর্থনেট ও উইনস্ট্রিম আইআইজি পুড়ে গেছে। ফলে আমরা ইতোমধ্যে ৭০-৮০ শতাংশ ব্যান্ডউইথ হারিয়েছি। সারাদেশের ৫৫০-৬০০ আইএসপি প্রতিষ্ঠানের সেবা বন্ধের পর্যায়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় যে পরিমাণ ড্যামেজ (ক্ষতি) হয়েছে, তাতে ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে ধারণা। আর যদি ডিভাইসগুলো পুড়ে গিয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আরও বেশি সময়ও লাগতে পারে। তার আগ পর্যন্ত সারাদেশে ইন্টারনেট ধীরগতির থাকবে।’

ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণ ও সেখানে ঢোকার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতি দেখে ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে- তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে বলে জানান আইএসপিএবি সভাপতি।

এদিকে, আইএসপিএবির মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঞা বলেন, ‘সারাদেশে ৬-৭টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এগুলোতে আবার অন্তত ৬০০-৭০০ আইএসপির ডাটা রাখা থাকে। কোনো আইআইজি শাটডাউন করলে, সেখানে যাদের ডাটা থেকে সেগুলোও বন্ধ হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সেখানে ঢুকতে পারলে পরিস্থিতি দেখে ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে। যদি ডিভাইসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত বা পুড়ে না যায়, সেক্ষেত্রে দ্রুত আগের অবস্থায় ফেরা যাবে। আর যদি ডিভাইস পুড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেক্ষেত্রে এক সপ্তাহ নয়, তারও বেশি সময় লাগতে পারে।’

এদিকে মহাখালীর খাজা টাওয়ারে ইন্টারকানেক্ট এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) রয়েছে। ফলে দেশের সব মোবাইল অপারেটরদের সংযোগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না।

বিশেষ করে এক অপারেটর প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য অপারেটরে কল দিতে গেলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একাধিকবার ডায়াল করার পর কল ঢুকছে। নিরবচ্ছিন্ন কল করার সুবিধা ও ইন্টারেনট সেবা পাচ্ছেন না মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরাও।

নেটওয়ার্ক বিভ্রাট ও তা সমাধানে চেষ্টার কথা জানিয়ে গ্রাহকদের এসএমএস দিচ্ছে মোবাইল অপারেটরগুলো। গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।

বাংলালিংক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘মহাখালীর খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইন্টারকানেক্ট এক্সচেঞ্জ সিস্টেমে বিঘ্ন হওয়ায় বাংলা‌লিংক থে‌কে অন্য অপারেটরে কল করতে কিছু গ্রাহকের সমস্যা হচ্ছে। সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। সাময়িক এ সমস্যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’ একই রকম বার্তা দিয়েছে গ্রামীণফোন ও রবি।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৫৯ মিনিটে রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। পরে ধাপে ধাপে আরও সাতটি ইউনিট যোগ দেয় সেখানে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের সহায়তায় যোগ দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীও। প্রায় আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ