মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির পুলিশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনা সদস্যসহ ২২৯ জন নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তিন দিনে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াদের মধ্যে বিজিপির মোট ১৮৩ জন সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া বাকি ৪৬ জনের মধ্যে দুজন সেনা, ৪ জন সিআইডি, ৫ জন পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের ৯ জন, ইমিগ্রেশন ২০ জন ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
বিজিবি জানিয়েছে, যারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন, তাদের অস্ত্র জমা নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে ।
গত শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিদ্রোহীরা বিজিপির একটি ফাঁড়ি দখল করে নিলে রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪ সদস্য। এরপর তিন দিনে সেই সংখ্যা বাড়তে বাড়তে সোয়া দুইশ ছাড়িয়েছে।
তাদের মধ্যে ১১৪ জন মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতবিল সীমান্ত দিয়ে এবং দুই জন বান্দরবানের ঘুমধুম ও কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত দিয়ে আরও পালিয়ে আসে।
তাদের নিরস্ত্র করে নিজেদের হেফাজতে নিচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। গুলিবিদ্ধ অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসাও দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে বিজিপির চার সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বিজিবির হেফাজতে থাকা এই ২২৯ জনের বাইরে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর আরো কেউ বাংলাদেশে প্রবেশে করে কোথাও আশ্রয় নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রাখাইনের বেশ কিছু চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মানুষের মিয়ানমার- বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখায় জড়ো হওয়ার তথ্য দিয়েছেন এপারে থাকা তাদের স্বজনরা। শূন্যরেখায় মানুষের জড়ো হওয়ার কিছু ভিডিও চিত্র সেখান থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও তারা দাবি করেছেন।