আসন্ন রমজান মাস ও ঈদকে সামনে রেখে খাদ্য মজুত ও জাল মুদ্রার বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়, এমন পণ্য মজুত করে রাখে। আরও বেশি লাভের আশায় দাম বাড়াতে অন্যান্য অনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করে। তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে সংস্থাটির ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সামনে রমজান মাস। এই মাসে এটা খুব দুর্ভাগ্যের বিষয়! কারণ, রমজানকে বলা হয় সংযমের মাস। কিন্তু আমরা দেখি, এই সময় আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন, তারা যেন সংযমের পরিবর্তে আরও লোভী হয়ে পড়েন।
তিনি আরও বলেন, যে নিত্যপণ্যগুলো আমাদের বেশি প্রয়োজন, সেইগুলো মজুতদারি, দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারসাজি করে থাকেন। এই সব অসাধু ব্যবসায়ী এবং পাশাপাশি যারা চোরাকারবারি তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, ঈদ সামনে এলেই জাল মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়। সে সব বিষয়েও নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। যদিও এসব বিষয়ে অভিযান চলছে, তারপরও সেই অভিযান আপনারা অব্যাহত রাখবেন। সেটাই আমাদের কাম্য।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে আরকটি সমস্যা দেখা যাচ্ছে কিশোর গ্যাং, কোভিড-১৯ মহামারির সময় এদের উত্থান ঘটেছে। এই ব্যাপারে অভিযান চলছে এবং এই বিয়ষটির দিকে আমাদের আরও দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাদক একটি পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিশেষকরে যুব সমাজের মেধা ও কর্মশক্তি নষ্ট হচ্ছে এবং তারা বিপথে চলে যাচ্ছে। এই মাদক বিস্তার প্রতিরোধে র্যাব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে যা আরো বেশি কার্যকর করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক সেবনকারি শুধু নয়, মাদক ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারিদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর কোন কোন এলাকা থেকে মাদক আমাদের দেশে ঢোকে সেসব রুট চিহ্নিত করে তা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি নারীর প্রতিসহিংসতা, ধর্ষণ, নারী পাচার প্রভৃতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ নির্যাতিতা নারীদের পুনর্বসানেও র্যাবের সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। র্যাবের মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে র্যাব ফোর্সেসের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী র্যাব সদর দপ্তরে পৌঁছালে বাহিনীটির একটি সুসজ্জিত চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।