র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের

নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কার না হলে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন ব্যর্থ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

 

সংস্থাটির সর্বশেষ বাৎসরিক প্রতিবেদনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, এই বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।

 

এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র‍্যাব দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহৃত হয়েছে। শুধু র‍্যাব বিলুপ্তিই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দিয়ে অন্য ইউনিটে একই কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে।

 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, র‍্যাবের কার্যক্রমে দায়মুক্তি প্রদান করা হয়েছে প্রায় প্রতিটি সরকারের আমলেই। এমনকি বাহিনীর এক প্রশিক্ষক এক সময় ১৬৯টি ক্রসফায়ারের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন।গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়। র‍্যাবপ্রধান এ কে এম শহীদুর রহমানও স্বীকার করেন যে, র‍্যাবের গোপন আটক কেন্দ্র রয়েছে। তিনি জানান, যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার র‍্যাব বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেয়, বাহিনী তা মেনে নেবে।

 

প্রতিবেদনে জাতিসংঘ এবং দাতা দেশগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে, র‍্যাব বিলুপ্তি ও কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিয়োগ ও পদোন্নতির ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি।

 

এইচআরডব্লিউ’র জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “র‍্যাবকে বিভিন্ন সরকারের নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন তাদের স্বাধীন করা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা প্রয়োজন।”প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, কাঠামোগত সংস্কার না হলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করার বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টা দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

সর্বশেষঃ