অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, একটি পার্লামেন্ট সংস্কার করবে সে পার্লামেন্টকে আসার ব্যবস্থা করে দিন। শুধু শুধু সময় ক্ষেপণ করবেন না। ছয় মাসেই বোঝা গেছে আপনাদের দৌড় কতটুকু।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ঐক্য চাই। ছাত্র-জনতার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আশা করি, এ ঐক্যের পথে আপনারা কেউ দেয়াল তৈরি করবেন না।
প্রফেসর ইউনূস আপনি অত্যন্ত সম্মানের ব্যক্তি, আমরা আপনাকে সম্মান জানাই। আপনার কোনো সফলতা দেখতে পাচ্ছি না, তবুও আমরা আপনাকে সম্মান জানাব। কিন্তু নাবালকের কথায় আপনি চলবেন না।
আরও পড়ুন-চিকিৎসার জন্য ভারতের বিকল্প হতে পারে চীন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
মেজর হাফিজ বলেন, নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়। মনে হয় আমরা কোনো অন্যায় দাবি করছি। আমরা কোনো অন্যায় দাবি করছি না, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসান সেটাও বলছি না। বলব আপনারা কিংস পার্টি গঠন করবেন না। যারা রাজনীতি করতে চায় তারা সরকার থেকে বেরিয়ে রাজনীতি দল গড়ুক।
মেজর হাফিজ আরও বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, অতি দ্রুত নির্বাচন চাই। নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন তার জন্য তিন মাস সময় যথেষ্ট। সুতরাং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার আসার সুযোগ দিন। ৭১ সালে যুদ্ধ করেছি, নির্বাচিত সরকার ছিল না বলে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছিল। আবার কেন নির্বাচিত সরকারের জন্য আমাদের তর্ক-বিতর্ক করতে হবে?
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের মানুষ সম্মান করে তার দেশ প্রেম এবং সততার জন্য। তার স্বাধীনতার ঘোষণা মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। সারা পৃথিবী জানে বাঙালি লড়াইয়ের জাতি। তারা প্রতিরোধ করতে জানে। মুক্তিযুদ্ধ যদি না হতো তাহলে দেখা যেত এক মাস পরে ভারতে যারা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল তারা দেশে ফিরত এবং শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হতো। আমরা দেশ বাঁচাতে এবং মা-বোনদের ইজ্জত রক্ষার্থে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছি।
ভারতের উদ্দেশ্য করে মেজর হাফিজ বলেন, তাদের পছন্দের নেত্রী বিদায় হওয়াতে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করে আম গাছ কেটে নিয়া যায়, বাংলাদেশের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়। আমরা নীরবে অবলোকন করছি, ভুলে যাবেন না ৭১ সালে যুদ্ধ করে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশে নতুন একটি কথা শোনা যাচ্ছে প্রোক্লেমেশন, মনে হচ্ছে দেশটা এ প্রথম স্বাধীন হলো। এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন তারা ৭১ সালের সেই দিনের কথা মনে করুন। যারা হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছেন। জীবনটা একেবারেই তুচ্ছ। এটা প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধার মনের কথা। আমরা যুদ্ধ করেছি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। মানবিক, মানবতা, সাম্য এ লক্ষ্য ধারণ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। তার মধ্যে এ প্রোক্লেমেশন জনগণ বোঝেই না।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজীজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদের আহমেদ খানের সঞ্চালনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফজলুর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।