তানভীর আহমেদ- রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে ইচ্ছুক গণমাধ্যমকর্মীদের নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে যে ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল তার একটিতে সংশোধনী আনা হয়েছে।
সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না, আগের এমন নির্দেশনায় সংশোধনী এনে ১০ মিনিটের বেশি ভোটকক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না বলা হয়েছে। এছাড়া অন্য নির্দেশনাগুলো বহাল রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ও যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে ১৩টি নির্দেশনার মধ্যে কয়েকটিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন সাংবাদিক নেতারা। এমন কড়াকড়ি নির্দেশনার মাধ্যমে গণমাধ্যমের শক্তিশালী ভূমিকাকে আড়াল করার চেষ্টাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন অনেক প্রার্থী। তাদের আশঙ্কা গণমাধ্যমের ওপর এমন হস্তক্ষেপের সুযোগ নিতে পারে অশুভশক্তি।
এর আগে রসিক নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি সাংবাদিকরা থাকতে পারবেন না মর্মে নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জাগো নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর শনিবার সকালে ওই নির্দেশনা সংশোধনী আনা হয়।
সংশোধনীসহ রসিক নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহে সেই ১৩ নির্দেশনা হলো-
১. নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন তবে কোনোক্রমেই গোপনকক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না।
২. একইসঙ্গে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি ভোটকক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না।
৩. ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না।
৪. ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
৫. ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে, কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাঁধার সৃষ্টি করা যাবে না।
৬. সাংবাদিকরা ভোট গণনা কক্ষে ভোট গণনা দেখতে পারবেন, তবে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না।
৭. ভোটকক্ষ হতে ফেসবুকসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
৮. কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়, এমন সব ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
৯. ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রিজাইডিং অফিসারের আইনি নির্দেশ মেনে চলবেন।
১০. নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না।
১১. কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না।
১২. নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন।
১৩. নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।
রংপুর সিটিতে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এবার মেয়র পদে ৯ জনসহ সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডে ৬৮ এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।