স্টাফ রিপোর্টার- ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মো. আরিফ (২৮) নামের সংঘবদ্ধ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ হতে ছিনতাইকৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান গত ২২ জানুয়ারি ভোর পাঁচটায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের চৌকস একটি মোবাইল টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, যাত্রাবাড়ী থানাধীন ধলপুর এলাকায় একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ছিনতাইকারী কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে মোবাইল টিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমক মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে মোবাইল টিমের ইনচার্জ এসআই শামীম রেজা ভিকটিমের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন।
তিনি আরও জানান, পরে মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে এর আশে পাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, ভিকটিমের কাছে প্রাপ্ত জিনিসপত্র ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে জানতে পারেন যে, মৃত ব্যক্তি (ভিকটিম) খলু মিয়া (২৮) ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন। গতগত ২২ জানুয়ারি গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে খলু মিয়া (২৮) রাত অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন গোলাপবাগ পৌঁছায়। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ভিকটিম গোলাপবাগ থেকে পাঁয়ে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে মায়ের দোয়া টায়ার এন্ড ব্যাটারি শপের সামনে পৌঁছালে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা কতিপয় ছিনতাইকারী ভিকটিমকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মো. আরিফ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ তার নিজ বাসায় অবস্থান না করে পলাতক ছিল। কিন্তু অত্র মামলার ঘটনার পরপর পুলিশি তৎপরতা দেখে হত্যার ঘটনা হতে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং হত্যা ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে ঘটনার পরদিন পূর্বের ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেফতার হতে নিজের বাসায় অবস্থান করেন। ওই দিন রাতেই পুলিশ পূর্বের ওয়ারেন্টে আরিফকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আভিযানিক টিম জেলহাজতে গিয়ে আসামি মো. আরিফকে সনাক্ত পূর্বক তাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করিলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ রিমান্ডে এনে আসামি মো. আরিফকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করে যে, সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ঘটনার দিন রাতে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলো। ভিকটিম রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে লোকটি তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ঘটনার একপর্যায়ে তারা ভিকটিমের বুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত আরিফ বিজ্ঞ আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে তার অপরাপর সহযোগীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। পলাতক অপর আসামি সোহেলসহ উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানায় পুলিশ।