স্টাফ রিপোর্টার- একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বাংলা একাডেমির করা আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ক্ষেত্রে যে বইগুলোর বিষয়ে বাংলা একাডেমি আপত্তি জানিয়েছে, ওই বইগুলো স্টলে রাখা যাবে না বলে আদেশ দেন আদালত।
বুধবার আদালতে বাংলা একাডেমির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মিন্টু কুমার মন্ডল। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাহাবুবুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক।
পরে মিন্টু কুমার মন্ডল বলেন, আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়েছে। ফলে প্রকাশনীটি একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ পাবে না। অর্থাৎ আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দিতে বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তই বহাল রইল।
বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো তিনটি বই হলো- ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে লেখক জিয়া হাসানের উন্নয়ন বিভ্রম এবং লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা।
এর আগে তিনটি বই বিক্রি ও প্রদর্শনী না করার শর্তে মুচলেকা দেয় আদর্শ প্রকাশনী। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি খসরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবীর লিটনের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলতি ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আয়োজিত বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দের নির্দেশ প্রদান করেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকার মো. মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে একটি রিট করেন। রিট আবেদনে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতিসহ চার জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, শুধু একটি বইয়ের জন্য কাগজ-কলমে মেলাতে পুরো প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ সে বইটি ব্যান্ড বা ব্ল্যাক লিস্টের নয়। তাদের এমন সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি আইন ২০১৩ অনুযায়ী কোনো বৈধতা নেই। একই সঙ্গে প্রতি বছর একাডেমি থেকে যে নীতিমালা করা হয়, তারও ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলা একাডেমি। তাদের এমন সিদ্ধান্ত সংবিধানের বাকস্বাধীনতার বিরোধী।