Search
Close this search box.

বঙ্গবন্ধু আ.লীগকে গণমানুষের সংগঠনে পরিণত করেছিলেন – শেখ সেলিম

স্টাফ রিপোর্টার- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগকে গণমানুষের সংগঠনে পরিণত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক ভিত্তি প্রসঙ্গে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘১৯৪৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধু কারাবন্দি ছিলেন। পরে তিনি কারামুক্ত হন। এরপর সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক কারাবন্দি হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বঙ্গবন্ধুকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সাধারণ সম্পাদক হয়ে আওয়ামী লীগকে জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন তিনি। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে মন্ত্রিসভা থেকেও পদত্যাগ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, সততা, অসাম্প্রদায়িকতার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছিল।’

বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘ছোটবেলায় তার (বঙ্গবন্ধু) বন্ধু মালেককে হিন্দু মহাসভার গোপালগঞ্জের নেতারা মারধর করলে প্রতিবাদ করেন। উল্টো বঙ্গবন্ধুকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

বঙ্গবন্ধুর ছাত্র রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করে। পরে ক্ষমা চাওয়ার বিনিময়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কথা বললেও বঙ্গবন্ধু ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।

শেখ সেলিম বলেন, ‘আদমজী জুটমিলে ৫০০ বাঙালিকে হত্যা করা হয়। তখন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন ওখানে গিয়েছেন কেন? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করতে তখন আতাউর রহমান খান, আব্দুস সালামের কাছে যান, কিন্তু কেউই রাজি হননি। পরে মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশের কাছে গেলে তিনি রাজি হন। তাকে সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু সেক্রেটারি হয়ে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে প্রবেশের পর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। একই সময় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সময় প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জাতীয় পতাকা এবং সাধারণ সম্পাদক দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এসময় পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত।

আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলটির নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ অংশ নিয়েছেন।

অন্যান্য দেলের মধ্যে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক চন্নু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী যোগ দিয়েচেন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে। তবে নিমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপির কোনও নেতা যোগ দেননি। দলটির প্রতিনিধি আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে আগেই।

এ ছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসপ্রধানকে আমন্ত্রণ করেছে আওয়ামী লীগ। তবে এবার বিদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সম্মেলনস্থলে সারা দেশ থেকে দলটির সাংগঠনিক জেলা-মহানগর শাখার সাড়ে ৮ হাজার কাউন্সিলর এবং ২৫ হাজার ডেলিগেট এসেছেন। সকাল ৭টা থেকে তারা সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন তারা। ৮টার পর থেকে দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে সম্মেলনে প্রবেশের প্রতিটি গেটে।

সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য পাঁচটি গেট রয়েছে। এর মধ্যে শিখা চিরন্তনের দিকে গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ভিআইপি অতিথিরা প্রবেশ করবেন। বাকি ৪টি গেট দিয়ে কাউন্সিলরদের প্রবেশ করছেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রত্যয়’। সম্মেলনের মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট, প্রস্থ ৪৪ ফুট। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি হয়েছে সম্মেলনের মঞ্চ। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চিত্র রয়েছে।

সম্মেলনের মঞ্চের পেছনের দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে সবার উপরে। তারপরেই সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছবি শোভা পাচ্ছে। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শামসুল হক এবং মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ ও জাতীয় চার নেতার ছবি রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ