Search
Close this search box.

সংলাপের প্রয়োজন কী, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার-  বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা কী?- এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারপরও যদি কোনো অভিযোগ থাকে সে বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে টেলিভিশন শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘর নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি কথা বলেন।

সংলাপের কোন প্রয়োজন আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন সংলাপের প্রয়োজনীয়তা কি? নির্বচনের আয়োজক সংস্থা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তারা প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বসতে পারে। যদিও নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারপরও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেটা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে।

বিএনপি বলছে আমরা ক্ষমতা চাচ্ছি না, আমরা চাচ্ছি শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়- এমন কথার প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চায়। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কর্মসূচি সেটিই প্রমাণ করেছে। তারা ১০ তারিখকে ঘিরেও আগুণ সন্ত্রাস চালিয়েছে। আগামী ১১ তারিখ আবার তারা অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে। সেখান থেকেও আবার অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমরা ১০ তারিখ যেমন সতর্ক ছিলাম ৩০ তারিখও সতর্ক অবস্থানে ছিলাম। ভবিষ্যতেও যদি তারা এরকম বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তাহলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উচিত জবাব দেবো।

বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে কোনো বাধা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার সেক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে ও করবে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা করার অপচেষ্টা চালালে সেটি জনগণ প্রতিহত করবে। জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও থাকবে।

বিএনপি সরকারের বিদায় চায় এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই বিদায় চায়। গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে এ কথা বলে আসছে। আমরা সরকার গঠনের পর থেকেই তারা এই বিদায় চাচ্ছে। এই সরকারকে বিদায় করতে হলে গণতান্ত্রিভাবে নির্বাচন করতে হবে। অন্য কোনো পথে এই সরকার বিদায় দেওয়া সম্ভব না।

ভারতীয় মিডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। ভারতের ৩৫ জন সাংবাদিক শুক্রবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন জনের সঙ্গে বসবেন। আমরা আশা করব, তারা আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াবে।

এদিকে বিএনপির সব কর্মসূচির সময়ে আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপির সব কর্মসূচির সময়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখবো। প্রয়োজনে সতর্ক পাহারায় থাকবো। এ দেশে আর কখনো ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের মতো পরিস্থিতি কাউকে তৈরি করতে দেবো না।’

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির কাছে প্রত্যাশা কী এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আজ ৪ জানুয়ারি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ছাত্রলীগের মিছিলের পেছনের সারির কর্মী হিসেবে আমার রাজনীতি শুরু। সুতরাং ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে সংগঠনটির সব স্তরের নেতাকর্মীদের, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আমি অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।’

বাংলাদেশের ইতিহাস আর ছাত্রলীগের ইতিহাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আমাদের বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরবর্তীসময়ে দেশ গঠনসহ সবক্ষেত্রে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সেই অতীতের গৌরবোজ্জ্বল পথ বেয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে ছাত্রলীগ ভূমিকা রাখবে, সেটিই আমার প্রত্যাশা। এর আগে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি, টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি, কানেকটিভিটি এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের ত্রিপুরা, দিল্লি ও অন্যান্য রাজ্যে আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রচারে তেমন কোনো অসুবিধা না থাকলেও পশ্চিমবাংলায় দেখাতে পারে না। মূলত সেখানকার ক্যাবল অপারেটররা শুরুতেই কয়েক কোটি টাকা এবং বছরপ্রতি কোটি টাকা দাবি করে, যা আমাদের চ্যানেলগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কিছু করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

তিনি আরও জানান, পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু বায়োপিক, দুদেশের যোগাযোগ বিশেষ করে আগরতলা-আখাউড়া ট্রেন রুটের অগ্রগতি, আমাদের ইকোনোমিক জোনগুলোতে ভারতের বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। সেই সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্য ও নাগরিকরা জীবন দিয়েছেন। সুতরাং দুদেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগ কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে যায় কিন্তু ভিসা পেতে দেরি হয়, সেটিকে আরও কীভাবে সহজ করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। হাইকমিশনার এসব বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন।

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে এটিই আমার প্রথম সাক্ষাৎ। অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে যে অনন্য বন্ধন রচিত হয়েছে, গত এক দশকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাদের নির্দেশিত বিভিন্ন বিষয় বাস্তবায়ন ও মানুষে মানুষে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ