বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যে সত্য বের হয়ে এসেছে। দেশে যা কিছু ঘটে প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিতেই ঘটে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বুধবার (৪ অক্টোবর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব।
সোমবার লন্ডনের মেথডিস্ট সেন্ট্রাল হল, ওয়েস্ট মিনিস্টারে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কথার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেছি, নিন্দা জানিয়েছি। তাঁর বক্তব্য অশ্লীল ও ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়— এ কথা বলেছি। তবে এ অশ্লীল বক্তব্য থেকে সত্যটি বের হয়ে এসেছে এবং তা হলো— এদেশে যা কিছু ঘটে তাঁর ইঙ্গিতেই ঘটে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, বিচার বিভাগের প্রয়োজন নেই। ক্যান্টমেন্ট বোর্ডের প্রয়োজন নেই। তার (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তই সিদ্ধান্ত। তিনি লন্ডনে বলেছেন যে, যেদিন তাকে ক্যান্টনমেন্টে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, সেদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোনদিন যদি সুযোগ পান তাহলে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে উচ্ছেদ করবেন এবং করেছেন।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, দুই বছর ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছি। ২২ জনের প্রাণ গেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মানে এই না যে, কেউ আঘাত করলে তার প্রত্যাঘাত করব না।
তিনি বলেন, এবার দেশে-বিদেশে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে— তারা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আইন ত্রয়োদশ সংশোধনী এখনও বিদ্যমান আছে। ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছে। সবাই যখন তত্ত্বাবধায়ক রাখতে বলেছে, শুধু শেখ হাসিনা একা তা পরিবর্তন করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। এর বাইরে কোনো নির্বাচন হবে না। পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা গঠন করার ব্যবস্থা নিন। তারপরই কেবল নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে। তার আগে নয়।
প্রথিতযশা আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও পেশাজীবী নেতারা।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, অ্যাডভাকেট কামরুল ইসলাম সজল ও শামীমুর রহমান শামীম।