স্টাফ রিপোর্টার: আজ সারাবিশ্বে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস। ২০০৬ সালে জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে গৃহীত হবার পরে ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছরের ৩০শে আগস্ট গুমকৃত ব্যক্তিদের স্মরণে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। গুম প্রতিরোধে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ কর্তৃক “International Convention for the Protection of All Persons from Enforced Disappearance” প্রণীত হয়। এই কনভেনশন প্রণয়নের ফলে গুম একটি মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়।
ফ্যাসিবাদী জমানাতে ‘আয়নাঘর’ নামক গোপন বন্দীশালায় থাকা গুমের শিকার হওয়া দুজনের জবানবন্দী জনসম্মুখে আসলেও সরকার কিংবা রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ব্যাপারে কোন বক্তব্য দেয়নি। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সাবেক প্রধান মিশেল ব্যাসেলেট’র সফরেও এ বিষয়টি বারবার উঠে এসেছিল, কিন্তু বরাবরের মতই সরকার ‘অস্বীকার ও ধামাচাপা’ দেবার পথ বেছে নিয়েছে, in a state of sustained denial। হাজার হাজার পরিবার, মানবাধিকার কর্মী ও সংস্থাসমূহ প্রতিনিয়ত ভয়, আতঙ্ক আর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হবার আশঙ্কায় গত দেড় যুগ ধরে দিনাতিপাত করছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সহ অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো গুমের পরিসংখ্যান তৈরি করে থাকে।১৪ বছরে (২০০৭-২০২১) দেশে গুম/অপহরণের শিকার হয়েছেন ৬১৪ জন। পরবর্তী সময়ে এদের মধ্যে ৭৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ফিরে এসেছেন ৫৭ জন, পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে ১১ জন, ডিবি পুলিশ অফিসে পাওয়া গেছে ৪ জন, র্যাবের কর্তৃক ৭ জন আটকের কথা জানা যায় আর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৬৭ জনকে।
ঢাকা ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের তথ্যমতে, চলমান আওয়ামী শাসনামলের ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০২ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে; RAB কে ঘোষণা করেছে ‘ডেথ স্কোয়াড’ হিসাবে। তথাপি গত অ/নির্বাচিত সরকার নাগরিকদের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা থেকে ক্ষান্ত হয়নি এবং হচ্ছে না। পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহার খুন এবং ২০২১ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ ও র্যাবের সাত কর্মকর্তার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরে গুম, খুন, ক্রসফায়ার কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি গুমের শিকার হয়েছেন বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা; ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ গত বছরে নিখোঁজ ৮৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে। এবি পার্টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত সকলকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, সকল মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার এই জমিনে কোন একদিন হবেই। সেজন্য আমরা অন্তর্বতীকালীন সরকারকে স্বাগত জানাই গুম বন্ধের কনভেনশন সাক্ষর করবার জন্য এবং গুমের তদন্ত কমিশন গঠন করবার জন্য। এখনো যারা গুম হয়ে আছে, তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে পরিবারের নিকট ফেরত দিতে হবে; আর যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনের তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের হত্যার বিচার করতে হবে। এবি পার্টি বিশ্বাস করে বন্দুকের নল ও ‘আয়নাঘর’র শৃঙ্খল কখনো জনগণকে দাবায়ে রাখতে পারেনি এবং ভবিষ্যতে পারবেও না, এটা আবারো প্রমানিত হয়েছে সম্প্রতি।
AB Party Condemns State-sponsored unlawful Detention, Torture in Secret Detention Centres, Enforced Disappearances and Crossfires; Stands firmly with Victim Families and Demands Justice under the supervision of UNHRC & other HR organisations. We welcome the decision of the interim government ratifying the convention and forming the investigation committee