Search
Close this search box.

পরিবারকে অবক্ষয় থেকে সুরক্ষিত রাখার উপায়

মুসলিম পরিবারগুলো আজ সময়ের একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে। পাশ্চাত্য পারিবারিক মডেল প্রকৃতপক্ষে পারিবারিক জীবনের জন্য উপযুক্ত প্যাটার্ন নয়। পারিবারিক জীবনে এই স্টাইলটির ফল হচ্ছে দাম্পত্য অবিশ্বাস, দীর্ঘ বিচ্ছেদ, ডিভোসের্র উচ্চ হার, সেপারেশান, ভাঙ্গা পরিবার, মাদকাসক্তি, কথিত স্বাধীনতাবাদ ইত্যাদি। যারা পশ্চিমা মডেলকে অন্ধভাবে অনুকরণ করে, তারা তাদের নারীদেরকে এমনভাবে শোষণ করে যে, পরবর্তীতে তাদেরকে নিছক যৌন উদ্দেশ্যমূলক করে তোলা হয়।

মুসলিম পরিবারের বর্তমান দুর্দশার একমাত্র সমাধান হল ইসলামী পারিবারিক মূল্যবোধ বজায় রাখা। ইসলাম পরিবারকে শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তোলে, যা স্থায়ীত্বতা, ধারাবাহিকতা, নিরাপত্তা, পারস্পরিক ভালবাসা এবং আন্তরিক ঘনিষ্ঠতা প্রদানে সক্ষম। পরিবারের ভিত্তি মজবুত এবং স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ইসলাম শুধুমাত্র পারিবারিক বন্ধনকে স্বীকৃতই দেয় না বরং বিবাহের উপর জোর দেয়, যা শালীনতা, নৈতিকতা, সুখসমৃদ্ধি ও মানব প্রকৃতির স্বাভাবিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বৈধ ঘনিষ্ঠতার একটি সুন্দর ও যথাযথ প্যাটার্ন।

ইসলামি ব্যবস্থায় বিয়ে ও পরিবার হল ফোকাল পয়েন্ট। কোরআনের অনেক আয়াত এবং রাসূল (সাঃ) এর অনেক হাদীস বিবাহকে একটি নৈতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং একটি ধর্মীয়-সামাজিক প্রতিশ্রুতি বলে ঘোষণা করে। মুসলিম পরিবারের লক্ষ্য অবশ্যই আল্লাহর ইবাদত হতে হবে, কারণ বিয়েকে ইবাদতের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পরিবারের দায়িত্ব শুধুমাত্র স্বামী, স্ত্রী, সন্তান বা নাতি-নাতনিদের উপর আবর্তিত হয় না। এটা তাদের সকলের প্রতি সকলের সম্মিলিত দায়বদ্ধতা এবং এমনকি এর বাইরেও আগের প্রজন্মের পূর্বপূরুষদেরকে অন্তর্ভূক্ত করে।

একটি মুসলিম পরিবারে ইসলামী মূল্যবোধের চর্চা অপরিহার্য এবং সেগুলিকে শুধু চর্চা করলেই হবে না, যত্ন সহকারে লালন করা উচিত। যার ফল হবে “যেমন আপনি বপন করবেন, তেমনি ফল কাটবেন”। পছন্দ-অপছন্দ, সৌন্দর্য ও অশ্লীলতার ধারণা, সুন্দর-ভালো, পরিস্কার-পরিচ্ছনতা বা বিশৃঙ্খলতা ইত্যাদি সম্পর্কে আমাদের ধারণা অবশ্যই সুন্নাতের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে, কারণ রাসূল (সাঃ) বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ ঈমানদার হবেনা, যতক্ষণ না তার নিজের ইচ্ছা ও পছন্দ আমি যা নিয়ে এসেছি তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।”

তাঁর এই বাণী আমাদের ব্যক্তিগত অভ্যাস, পোষাক, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদির ক্ষেত্রেও প্রয়োজ্য। মুসলিম পরিবার সমূহের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এর সদস্যদের মধ্যে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্গত হওয়ার দৃঢ় অনুভূতি জাগ্রত করতে হবে। পরিবার একটি পৃথক বিষয় নয়; এটি সমাজের অংশ। তাই এটাকে আরো শক্তিশালী করা আবশ্যক। একটি মুসলিম পরিবারকে অবশ্যই অন্যান্য মুসলিম পরিবারের সাথে মেলামেশা করতে হবে। অভিভাবকদের অবশ্যই দুর্নীতিবাজদের এড়িয়ে চলতে হবে এবং অসুস্থ পরিবেশের সামাজিকতা থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং তাদের সন্তানদেরও একই কাজ করা উচিত। পাশাপাশি, তাদের অবশ্যই আরও ভাল বিকল্প দৃষ্টান্ত তৈরী করতে হবে এবং ভাল মুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব করার চেয়ে ভাল বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। এগুলি হল মুসলিম পরিবারকে প্রমোট ও প্রিজার্ভ করার কিছু উপায়।

উপসংহারে, আমি ধর্মতত্ববিদদের কাছে ইসলামের বিষয়গুলো সম্পর্কে ক্রমাগত সচেতন এবং সৃজনশীল থাকার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি। শিক্ষিত মুসলিমদেরকে অবশ্যই চিন্তা করা, গবেষনা করা, দেখা, উপলব্ধি করা, জানা, জ্ঞানী হওয়া, যৌক্তিক হওয়া ইত্যাদি  ইসলামিক ধারণাসমূহ মুসলিম সমাজে প্রয়োগ করতে হবে এবং পারিবারিক বিষয়েও কুরআনিক ও রাসূলের নীতি অনুযায়ী আমাদের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করতে হবে।

সূত্র: এবাউট ইসলাম

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ