Search
Close this search box.

অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দান করলে সওয়াব হবে কি?

ধর্ম ডেস্ক: লাখ লাখ তরুণের স্বপ্ন বিক্রি করে পাহাড় সমান সম্পদ গড়ে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী। বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এখন তিনি জেলে। গণমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আবেদ আলীর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রশ্ন ফাঁসে কত টাকা ইনকাম করেছেন? জবাবে আবেদ আলী বলেন, ‌‌‘প্রশ্ন ফাঁসে যত টাকা কামাই করেছি, সব খরচ করেছি আল্লাহর রাস্তায়।’

আবেদ আলীর এই অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা নিয়ে ইসলাম কী বলে?

হারাম দ্বারা নিষিদ্ধ কাজ বোঝানো হয়। ইসলামে মন্দ কাজসমূহের মধ্যে হারামকে সবচেয়ে গুরুতর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদি কোনো অর্থ হারামের মধ্যে পড়ে তবে তা দিয়ে ভালো কাজ করলেও গুনাহ হবে।

কোরআনে আল্লাহ তার সন্তুষ্টির জন্য সদকাকারীদের, তার পথে খরচকারীদের তার সন্তুষ্টি, সওয়াব ও জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তবে এ সওয়াব লাভের জন্য দান-সদকা হালাল সম্পদ থেকে হওয়া জরুরি। আল্লাহ পবিত্র তিনি শুধু পবিত্র বা হালাল সম্পদ থেকে কৃত দানিই গ্রহণ করেন। হালাল সম্পদ থেকে অল্প দান করলেও আল্লাহ তা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন।

আবু হোরয়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল বলেছেন, আল্লাহ শুধু হালাল সম্পদের দানই কবুল করেন। কোনো ব্যাক্তি হালাল সম্পদ থেকে দান করলে করলে দয়াময় আল্লাহ ডান হাতে তা গ্রহণ করেন। তা একটি খেজুর হলেও দয়াময়ের হাতে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে পাহাড়ের চেয়েও বড় হয়ে যায়। যেভাবে তোমরা নিজেদের ঘোড়ার বাচ্চা ও উটের শাবক পালন কর। (সহিহ মুসলিম: ২২১৪)

আল্লাহর কাছে হারাম সম্পদ দান করলে তা কবুল হয় না এবং তা দানকারীর গুনাহই বৃদ্ধি করে।

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে হারাম সম্পদ উপার্জন করবে তারপর ওই সম্পদ দিয়ে দান করে বা আত্মীয়দের হক আদায় করে, তা তার পাপ গণ্য হয়। (তাবরানি)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদের সদকা কবুল করেন না।’ (মুসলিম, হাদিস, ২২৪; তিরমিজি, হাদিস, ০১; নাসায়ি, হাদিস, ১৩৯)

ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘বান্দা হারাম পথে উপার্জন করবে, এরপর তা থেকে আল্লাহর পথে খরচ করবে এবং তাতে বরকত দেওয়া হবে বা সে তা থেকে সদকা করবে এবং তা কবুল করা হবে—এমন ধারণা অমূলক। বরং ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর সেই সম্পদ রেখে গেলে তা তাকে আরও বেশি জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে।…’ (আহমাদ, হাদিস, ৩৬৭২; বাজ্জার, হাদিস, ২০২৬)

 

অন্য এক হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করবে, এরপর তা সদকা করবে—সেই সদকায় কোনো সওয়াব হবে না; বরং অবৈধ উপার্জনের গুনাহের বোঝা তার ঘাড়ে চেপেই থাকবে।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩২১৬; হাকিম, হাদিস, ১৪৪০)

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ