Search
Close this search box.
ডিম ও চালের দাম বাড়া নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী

একটু সময় দেন আমরা চেষ্টা করছি

একটু সময় দেন আমরা চেষ্টা করছি

স্টাফ রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আলোচনা হচ্ছে, কিভাবে দাম কমানো যায়। সব কিছু তো রাতারাতি কমানো সম্ভব নয়। এটা সত্যিকার অর্থে বিপজ্জনক, একটু সময় দেন আমরা চেষ্টা করছি। চাল-ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে? জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার চেষ্টা করছে। তবে এটা মনে রাখতে হবে, রাতারাতি দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। আমি তো জানি না পুতিন সাহেব (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) কবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন। তবে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, আমরা স্বীকার করছি। প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন। আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যে দাম সহনীয় হয়ে আসবে।

মন্ত্রী বলেন, মুরগির ডিম আমদানি করলে যদি দাম কিছুটা কমে তাহলে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সাথে চালের দাম কিভাবে ৪ টাকা বাড়ে এ নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

টিসিবির  ১ কোটি পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিম আমদানি করতে গেলে একটু সময় লাগবে। আমরা একটু দেখি। যদি এমন হয় যে, ডিম আমদানি করলে দাম কিছুটা কমবে তাহলে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবো।

ডিমের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, আমরা কৃষি, খাদ্য ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেছি। আমাদের সচিব যাচ্ছেন বৈঠকে। সেখানে ডিমের দাম কেন বেশি হলো সেগুলো আলোচনা করে কোথায় সমস্যা হয়েছে সেটা আমরা দেখবো।

নিত্যপণ্যের দামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কি কি করছেন জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছি। কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে সেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন সময় এরকম সমস্যা হয়েছে। সেগুলোও আমরা চিহ্নিত করেছি। তবে দুই চার পাঁচ দিন সময় লেগেছে। আশা করছি এটারও একটা ফলাফল আমরা পাবো।

আইনের প্রয়োগ বা সুশাসন থাকলে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়ার সাহস পেতো কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেয় কথা ঠিক। আর একটা কথাও ঠিক আমরা সেটা বিবেচনা করতেও চাই না। এখানে ছোট্ট একটা ব্যাপার রয়েছে। যেমন, ৮০ টাকায় পেঁয়াজ এনে ব্যবসায়ীরা ২০ টাকায় বিক্রি করেছে। তখনতো কেউ কিছু বলেনি। আসলে এটা চাহিদা ও সরবরাহের ব্যাপার। আমাদের যে সমস্যা হয়, আমরা সেটা বিবেচনা করার চেষ্টা করি না।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ইস্যুতে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অনেকেই আশাবাদী, অক্টোবরের মধ্যে হয়তো পরিস্থিতি… কতগুলো ফ্যাক্টর তো কাজ করে। এখন আমি জানি না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাহেব কবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চালের মূল্য প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা বাড়তে পারে। কিন্তু কেজিতে ইতোমধ্যে দাম বেড়েছে ৪ টাকা। এ নিয়ে কিছুটা বিস্মিত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, কেজিতে এত টাকা দাম বাড়ার কোনো যুক্তি আছে? কিন্তু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিচ্ছেন। আর ব্যবসায়ীরা যখন সুযোগ নেন, একেবারেই নেন।

ব্যবসায়ীদের ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈশ্বিক বাজারে তেলের দাম কত এবং ডলারের দাম বিশ্লেষণ করে তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবির পণ্য বিতরণ সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে সম্প্রতি টিআইবি যে গবেষণা করেছে, সেখানে তথ্যের যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। গবেষণায় সঠিক তথ্য উঠে আসেনি বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

১১ আগস্ট টিআইবির প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, সাড়ে ৩৯ শতাংশ মানুষ ফ্যামিলি কার্ড পাননি। উত্তরদাতাদের ৮০ শতাংশ বলেছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে তারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবি এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে মাত্র এক হাজার ৪৭ জনের ওপর জরিপটি করেছে। এত কমসংখ্যাক মানুষ দিয়ে সত্যিকারের তথ্য উঠে আসার কথা নয়।

মন্ত্রী বলেন, এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯৫ লাখ কার্ড তৈরি হয়েছে। বাকি পাঁচ লাখ কার্ড বাকি আছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সাড়ে তিন লাখ। বাকি দেড় লাখ ঢাকার বাইরে। টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ