Search
Close this search box.
`জলবায়ু সম্মেলন ২০২২”

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে দ্রুত সরে আসার আহবান জানাবেন সুনাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে আরো দ্রুত সরে আসতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাবেন।  মিশরে সোমবারের সিওপি২৭ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানাবেন বলে তার কার্যালয় সূত্রে বলা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যকে স্বচ্ছ জ্বালানির পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে সুনাক ভবিষ্যত সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলা খ্বুই জরুরি বলে সতর্ক করবেন।

রবিবার তার দেশ ছাড়ার প্রাক্কালে দেয়া এই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সুনাক বলেছেন গ্লাসগোয় গত বছর বিশ্ব নেতারা মিলিত হয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে একটি ঐতিহাসিক রোডম্যাপে সম্মত হয়েছিল। এসব অঙ্গীকারগুলো পূরণ করা এখন আগের চেয়ে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সুনাক আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যত সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্যে মৌলিক দায়িত্ব। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্কটল্যান্ডে আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলনে প্রায় দুশো দেশ অংশ নিয়েছিল।

এবারের জলবায়ু সম্মেলন মিশরের লোহিত সাগর তীরবর্তী শার্ম আল শেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানিয়েছেন, সরকার সবার সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেবে, এই মুহূর্তে এমন আশা করা উচিত নয়। যুক্তরাজ্য বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি, সে বিষয়ে সত্য কথা বলে দেশবাসীর আস্থা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ঋষি সুনাক বলেন, সরকার সবকিছু কীভাবে করে? অর্থ ধারের মাধ্যমে করে, যা শেষ পর্যন্ত, যেমনটি আমরা দেখেছি- উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিশ্বাসযোগ্যতা হারানো, সুদের হার বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়। তাই আমি মনে করি, আপনারা কেন এই পর্যায়ে এসেছেন, সে বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সৎ থাকতে হবে। এটিকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো সরকারই সব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। জীবন এত সহজ নয়। এসময় যুক্তরাজ্য জুড়ে পরিবারগুলোর মাসিক খরচ বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগের বিষয়েও কথা বলেন দেশটির প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বন্ধকী বিল নিয়ে মানুষের যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা আমি পুরোপুরি স্বীকার করছি। এটি মানুষের সবচেয়ে বড় খরচগুলোর মধ্যে একটি। তাই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধিকে সীমিত করার জন্য যা করা যায়, তা করছি।

ঋষি বলেন, মার্গারেট থ্যাচার (সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) ঠিকই বলেছেন, মূল্যস্ফীতি হলো এক নম্বর শত্রু। যাদের আয় সবচেয়ে কম তাদের ওপর মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। আমি এর লাগাম টেনে ধরতে চাই। পূর্বসূরী লিজ ট্রাসের ক্ষণস্থায়ী শাসনামলে জনগণের মধ্যে যে বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল, তা জরুরি ভিত্তিতে পুনরুদ্ধার দরকার বলে মনে করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ নেতা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারে অর্থমন্ত্রী ছিলেন ঋষি সুনাক। সেই সময়ে তার গৃহীত করোনাজনিত ক্ষতিপূরণ নীতির কথা উল্লেখ করে এ কনজারভেটিভ নেতা বলেন, প্রশ্ন যখন অর্থনীতি পরিচালনার, অতীত রেকর্ডের কারণেই তার ওপর জনগণ ভরসা করতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি স্বীকার করি, গত কয়েক সপ্তাহ বা মাসে মানুষের বিশ্বাসের ক্ষতি হয়েছে। আমি বুঝতে পারি, বিশ্বাস দেওয়া যায় না, এটি অর্জন করতে হয়। এখন মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমার প্রধান কাজ।

তিনি বলেন, তারা বিশ্বাস করতে পারে, আমি এমন একজন, যে অর্থনীতি বোঝে। আমি এমন একজন, যার ওপর তারা আস্থা রাখা যায়, যে কঠিন অর্থনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিচালনা করবে। এটি করার ক্ষেত্রে আমার অতীত রেকর্ড রয়েছে। এসময় ইনকাম ট্যাক্স বা ভ্যাটের হার বাড়াতে কনজারভেটিভ পার্টির পূর্বপরিকল্পনার সঙ্গে থাকবেন কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ঋষি সুনাক। তিনি বলেন, আমি আর কোনো ট্যাক্স নীতি নিয়ে কথা বলবোই না।

কনজারভেটিভ পার্টির সবশেষ নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠকে যৌথভাবে কাজ করার প্রস্তাব বিবেচনা করেছিলেন কি না জানতে চাইলে ঋষি সুনাক বলেন, পার্লামেন্টে সহকর্মীদের কাছে আমার জোরালো সমর্থন ছিল এবং এই কাজটি (প্রধানমন্ত্রিত্ব) করার জন্য আমি নিজেকেই সেরা ব্যক্তি বলে মনে করি, সে সম্পর্কে তার (জনসনের) সঙ্গে স্পষ্ট ছিলাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ