Search
Close this search box.

প্রথম দুই ঘন্টা আগে জিততে চান সাকিব

প্রথম দুই ঘন্টা আগে জিততে চান সাকিব

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে আজ। সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় টেস্টটি শুরু হবে। হোয়াইটওয়াশ এড়াতেই এ টেস্টে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে সাকিববাহিনী। আজ শুরু হতে যাওয়া টেস্টে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যেটাই আগে করুক বাংলাদেশ, প্রথম দুই ঘন্টা জিততে চান বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছেন, ‘আমরা শুধু ফোকাস করতে পারি ম্যাচের প্রথম দুই ঘণ্টায় আমরা ব্যাটিং করি আর বোলিং করি । তারপরে থেকে আসলে ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের খেলতে হবে। কিন্তু প্রথম দুইটা ঘণ্টা আমরা ভালোভাবে শুরু করার চেষ্টা করব।’

শুরুটাই ভালো হয় না বাংলাদেশের। ব্যাটিংটা তো যাচ্ছে তাই হচ্ছে। শুরুতেই এক ঘন্টার মধ্যে ৪-৫ উইকেট পড়ে যাচ্ছে। সেন্ট লুসিয়া টেস্টে যদি বাংলাদেশ হারে, তাহলে হোয়াইটওয়াশ হবে। আর যদি জিতে, তাহলে সিরিজ ১-১ ড্র হবে। আর যদি বাংলাদেশ ড্র করে, তাহলে সিরিজ ০-১ ব্যবধানে হার হবে।

দুই দলের মধ্যকার অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। দুই ইনিংসে বাজে ব্যাটিং হয়েছে। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে ২৬৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে টার্গেট পড়া ৮৪ রানের চেয়ে ৪ রান (৮৮ রান) বেশি করে জিতে যায়। স্বাগতিকরা সিরিজে এগিয়ে আছে।

প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসান (প্রথম ইনিংসে ৫১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রান) ও নুরুল হাসান সোহান (দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রান) ছাড়া আর কেউ-ই নজর কাড়তে পারেননি। তবে বাংলাদেশ বোলাররা নিজেদের ঠিকই মেলে ধরেছেন। প্রথম ইনিংসে স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ সবচেয়ে বেশি ৪ উইকেট শিকার করেছেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩টি উইকেটই নিয়েছেন পেসার খালেদ আহমেদ।

দ্বিতীয় টেস্টে একাদশে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা জোড়ালো। পেসার শরিফুল ইসলামকে দ্বিতীয় টেস্টের দলে নেওয়া হলেও পেস আক্রমনে মুস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদই হয়ত শেষপর্যন্ত একাদশে থাকবেন। তবে ব্যাটিংয়ে একটা যে পরিবর্তন হবে, তা নিশ্চিতই বলা যায়। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয় দ্বিতীয় টেস্টের জন্য দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। টপঅর্ডারে নাজমুল হোসেন শান্ত দিনের পর দিন ব্যর্থ হচ্ছেন। শান্তর স্থানেই হয়ত বিজয়কে দেখা যেতে পারে। আর যদি মুমিনুল হককে বিশ্রাম দেওয়া হয়, তাহলে এই স্থানে বিজয় খেলবেন। এ পরিবর্তন নিয়ে এখন ভালো কিছু করার আশায় আছে বাংলাদেশ।

একাদশে পরিবর্তন নিয়ে সাকিবও ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাথায়ও পরিবর্তনের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। মিটিং করে টিম সেটা ডিসাইড করবে। আমাদের ইচ্ছা আছে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া যাতে সবাই জানে যে কারা খেলছে, আর কারা খেলছে না।’

সেন্ট লুসিয়ায় এরআগে ২০০৪ সালে প্রথম খেলে বাংলাদেশ। সেই টেস্টে ড্র করে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো টেস্টে কোন দলের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে ড্র করে বাংলাদেশ। এরপর ১০ বছর পর দ্বিতীয়বার, ২০১৪ সালে আবার যখন খেলে তখন বড় ব্যবধানে হার হয়। এবার প্রায় ৮ বছর পর আবার এই স্টেডিয়ামে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে এরআগে ২০১৮ সালে সবশেষ সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়। তারও আগে ২০১৪ সালে সিরিজ খেলেও হোয়াইটওয়াশ হয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সিরিজ জিতে। হোয়াইটওয়াশ করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথমবার ২০০৪ সালে সেন্ট লুসিয়াতেই খেলেছিল বাংলাদেশ। ড্র করা সেই টেস্টের স্মৃতি এবং ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবার বিদেশের মাটিতে টেস্ট ও সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি কী আবার ফিরে আসবে? নাকি আবারও হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ?

এবার হোয়াইটওয়াশ হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টানা তিন সফরে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ। ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪, ২০১৮ সালের সিরিজগুলোর মধ্যে একবারই সিরিজ জেতা যায়। ২০০৪ সালে ০-১ ব্যবধানে সিরিজ হার হয়। এছাড়া আর দুইবারই হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। এবার হোয়াইটওয়াশ হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ। এই দুঃখস্মৃতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে বাংলাদেশ?

আগের ম্যাচে কী হয়েছে, তা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। দ্বিতীয় টেস্ট নিয়েই ভাবছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগের ম্যাচে যেটা ছিল সেখান থেকে নেওয়ার মতো কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। লক্ষ্য থাকবে ভালোভাবে ম্যাচটা শুরু করতে।’

কঠিন কন্ডিশনে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা টিকতে পারেন না। তা থেকে বের  হতে হবে বলেও জানান সাকিব। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ তিন টেস্ট যদি দেখেন, তাহলে বলতে পারেন (পেসের বিরুদ্ধে দুর্বলতা)। তার আগের তিন টেস্ট দেখলে বলবেন স্পিন। সুতরাং কঠিন কন্ডিশনে আমরা কখনোই টিকতে পারিনি। এখানে একটা সুযোগ, একইসাথে চ্যালেঞ্জও। এখন এটাকে আমরা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি সেটা দেখতে হবে। সবাই যার যার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা করেছে। যার যার শক্তির জায়গা অনুযায়ী কিভাবে খেলা সম্ভব সেই আলোচনা করেছি।’

দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু সেন্ট লুসিয়ায় পেসাররাই দাপট দেখাবেন, তা জানেন সাকিব। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন উইকেটে স্বাভাবিকভাবে রানটা বেশি হয়। খেলাটাও দ্রুত হয়। তাড়াতাড়ি রানের সম্ভাবনা থাকে। হরিজন্টাল ব্যাট শটগুলো বেশি কাজে আসে। আমাদের পেস ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আমার মনে হয় মানিয়ে নিতে পারবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন নিউজিল্যান্ড কিংবা অন্যান্য দেশে এ ধরনের উইকেটই থাকে। আমাদের খেলোয়াড়রা যেহেতু এ ধরনের কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত, খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ